নজরুল ইসলাম , যুক্তরাজ্য থেকে
মহানবী (সা.) বলেন, যে মুসলমান অন্য মুসলমানকে বস্ত্রহীন অবস্থায় পেয়ে বস্ত্র দান করে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে সবুজ বর্ণের পোশাক পরাবেন। খাদ্য দান করলে জান্নাতে ফল খাওয়াবেন, পানি পান করালে জান্নাতে শরবত পান করাবেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৭৫২)
আকুয়া দেশি প্রবাসী whatsapp গ্রুপ- “সদাকায়ে জারিয়া ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপ, যুক্তরাজ্য ভিত্তিক মানবিক এই সংগঠনটি ইতিমধ্যে সমাজ সেবায় এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সংগঠনের প্রধান এডমিন কমিউনিটি নেতা শেখ ইসহাকের নেতৃত্বে দেশ এবং বহিঃবিশ্বে থেকে মানব সেবায় উজ্জীবিত নিবেদিত মানবিক ব্যক্তি বিশেষ এই গ্রুপের সাথে সংশ্লিষ্ট, সম্পৃক্ত হয়ে গত কয়েক বছর ধরে ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করে যাচ্ছেন। মসজিদ মাদ্রাসা ঈদগা নির্মাণ, রাস্তা বাড়িঘর নির্মাণ, শীতবস্ত্র ,শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ, হতদরিদ্রদের চিকিৎসা সহায়তা এমন সব মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে সামাজিক সংগঠনটি।
মানুষ মানুষের জন্য। প্রয়োজনে একে অন্যের দ্বারস্থ ও মুখাপেক্ষী হতে হয়, আবার বিপদে একে অপরের পাশে দাঁড়াতে হয়। একজনকে অন্যজনের হাসি-কান্না ও সুখ-দুঃখের সাথি হতে হয়। সামান্য বিবেকসম্পন্ন ব্যক্তি কাউকে বিপদসংকুল দেখে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে না।
ইসলামের শিক্ষা—দুর্যোগ, দুর্ভোগ, দুর্দিনে সর্বশক্তি ব্যয় করে বিপদগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানো; সর্বপ্রকার অর্থ ও খাদ্য সহায়তা, ত্রাণসামগ্রী বিতরণ, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা এবং চিকিৎসাসেবায় এগিয়ে আসা। এটা ঈমানের দাবি। এজাতীয় কাজে মহান আল্লাহও খুশি হন। কোরআন ও হাদিসে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে এ বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ঈমানদাররা, আমি তোমাদের যে জীবনের উপকরণ দিয়েছি, তা থেকে তোমরা ব্যয় করো সেদিন আসার পূর্বেই যেদিন কোনো বেচাকেনা, বন্ধুত্ব এবং সুপারিশ থাকবে না। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৫৪),
এই গ্রুপের একজন সদস্য হিসাবে সকলের সাথে হাতে হাত কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে স্ব ইচ্ছায় মানবিক কাজকর্মে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। যতটুকু উপলব্ধি করতে পেরেছি গ্রুপের সকল সদস্যের একটা পজিটিভ মন আছে। দেশের অসহায় দরিদ্র মানুষের দুঃখ ও দুর্দশার খবর শুনলে তারা ঝাপিয়ে পড়ে।
অর্থ-বিত্ত, শক্তি-সামর্থ্য ও সহায়-সম্পত্তির সাময়িক সময়ের জন্য মালিকানা দেওয়া হয়েছে মানুষকে। আল্লাহ তাআলা এসবের মাধ্যমে মানুষকে পরীক্ষা করে থাকেন। যারা তা যথাযথ পন্থায় কাজে লাগায় তারা সফল। অন্যথা কিয়ামতে এর জন্য তাদের ধরা খেতে হবে।
সাহাবায়ে কিরাম নিজেদের খাবার পরস্পরের মাঝে ভাগাভাগি করে খেতেন। নিজেদের আনন্দ-বেদনা একে অপরে ভাগাভাগি করে নিতেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা তাঁদের প্রশংসা করে বলেন, ‘আর তারা শুধু আল্লাহকে ভালোবেসে খাদ্য দান করে মিসকিন, এতিম ও বন্দিদের। তারা বলে, শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আমরা তোমাদের খাদ্য দান করেছি, তোমাদের কাছে আমরা এর জন্য কোনো বিনিময় চাই না এবং কোনো কৃতজ্ঞতাও না। ’ (সুরা : দাহর, আয়াত : ৮-৯),
আমাদের সমাজে অনেক বৈষম্য, কেউ বসবাস করেন অট্টালিকা বাড়িতে আবার কারো মাথা গুঁজার ঠাঁই নেই। কারো আবার নুন আনতে পান্তা ফুরায়। সমাজে অসহায় দরিদ্র হতদরিদ্র মানুষের আর্তচিৎকার ও অসহায়ত্বের সংবাদ ভেসে আসছে। দুর্যোগে কেউ হারাচ্ছে আপনজন, আর্থিকভাবে কেউ হয়েছে রিক্ত ও নিঃস্ব, আবার কেউ মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। এমন অবস্থায় তাদের সাহায্য-সহায়তার জন্য দেশের সম্পদশালী ও বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে। আবু জার (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, কোন আমল উত্তম? তিনি বলেন, আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা এবং তার পথে জিহাদ করা। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কোন ধরনের ক্রীতদাস মুক্ত করা উত্তম? তিনি বলেন, যে ক্রীতদাসের মূল্য বেশি এবং যে ক্রীতদাস তার মনিবের কাছে আকর্ষণীয়। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ যদি আমি করতে না পারি? তিনি বললেন, তাহলে কারিগরকে (তার কাজে) সাহায্য করবে কিংবা বেকারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে। আমি আরো বললাম, এও যদি না পারি? তিনি বলেন, মানুষকে তোমার অনিষ্টতা থেকে মুক্ত রাখবে। বস্তুত এটা তোমার নিজের জন্য তোমার পক্ষ থেকে সদকা। (বুখারি, হাদিস : ২৫১৮)
দশে মিলে করি কাজ হারি-জিতি নাহি লাজ’ সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে এই মন্ত্রকে গুরুত্ব দিয়ে আকুয়া দেশি প্রবাসী whatsapp গ্রুপ পারস্পারিক শ্রদ্ধা সৌহার্দ্যবোধ আস্থা বিশ্বাস অক্ষুন্ন রেখে এমন সব মানবিক কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে করে যাচ্ছে।
প্রধান এডমিন কমিউনিটি নেতা শেখ ইসহাক বলেন, আমরা অত্যন্ত সুশৃঙ্খভাবে গ্রুপটি পরিচালনা করে যাচ্ছি। আমাদের একটি এডমিন প্যানেল আছে, উপদেষ্টা মন্ডলী আছেন। মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য দেশে আমাদের একটি বলিষ্ঠ টিম রয়েছে। আমরা যেখানেই যে মানবিক কাজ করছি, সকলের সাথে পরামর্শ করে সকলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী করে যাচ্ছি। আপনাদের সকলের পরামর্শে মানবিক এই গ্রুপকে একটি ফাউন্ডেশনে রূপ দান করার জন্য আমরা সিদ্ধান্ত হাতে নিয়েছি। আপনারা সকলে এগিয়ে এসেছেন। ইনশাআল্লাহ, আপনাদের সকলের সহযোগিতা নিয়ে এই যাত্রায় অব্যাহত রাখব।আপনাদের সকলের সুস্বাস্থ্য এবং নেক হায়াত কামনা করছি।
মন্তব্য করুন