হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ॥
হবিগঞ্জ জেলার অন্তর্গত রেলপথ রয়েছে প্রায় ৫০ কিলোমিটারেরও বেশি। আর ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে রেলক্রসিং রয়েছে প্রায় ৫৬ টি। এর ভেতরে মাত্র ২০টি স্থানের রেলক্রসিংয়ের তথ্য ও অনুমোদন রয়েছে রেল বিভাগের কাছে। অনুমোদনহীন বাকি ৩৬টি ছোট-বড় রেলক্রসিংই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রেলওয়ের প্রকৌশলী বিভাগ ১৮টি রেলক্রসিং দেখভাল করলেও বাকি দুটি রেলওয়ে ট্রাফিক বিভাগের। অনুমোদিত সবকয়টি রেলক্রসিংয়ে গেটম্যান আছে। অনুমোদিত রেলক্রসিংয়ের মধ্যে লস্করপুর, ইসলামী একাডেমি, নছরতপুর ও অলিপুর রেলক্রসিং খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ইতঃপূর্বে বহুবার লস্করপুর, নছরতপুর ও অলিপুর রেলক্রসিংয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন।
এদিকে শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে প্রকৌশলী বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আখাউড়া-সিলেট রেল সেকশনের মধ্যে মুকন্দপুর রেলস্টেশন থেকে পূর্বে লস্করপুর-সাটিয়াজুড়ি রেলস্টেশনের মধ্যেবর্তী স্থান পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে ১৮টি রেলক্রসিংয়ের অনুমোদন আছে এবং ৩৬টি অনুমোদনহীন। অবৈধ এসব রেলক্রসিংগুলো দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। গ্রামাঞ্চলের ছোট ছোট রাস্তায় রেললাইন অতিক্রম করার সময় প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, টমটম, মোটরসাইকেল।
সরেজমিন দেখা যায়, অনুমোদিত রেলক্রসিংয়ে গেটম্যান থাকলেও দায়িত্বে অবহেলা, গেট নষ্ট হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী ইত্যাদি নানা কারণে ঘটছে দুর্ঘটনা। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক নির্মাণের পর থেকে অলিপুর, নছরতপুর ও লস্করপুরে পাঁচ শতাধিক দুর্ঘটনায় শতাধিক লোক নিহত এবং দুই শতাধিক অহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, মহাসড়ক নির্মাণের সময় লস্করপুর ও অলিপুর ওভারব্রিজ হওয়ার কথা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে দুই স্থানে ওভারব্রিজ হয়নি।
নাম না প্রকাশে শর্তে একজন গেটম্যান জানান, রেলক্রসিং থেকে পার্শ্ববর্তী রেলস্টেশনের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য কোনো টেলিফোন নেই। যে কারণে কখন ট্রেন আসছে তা তারা জানতে পারছে না। ফলে রেলক্রসিংগুলোতে প্রতিনিয়ত ঘটছে মারাত্মক দুর্ঘটনা।
শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) মো. সাইফুল্লাহ রিয়াদ জানান, অনুমোদিত রেলক্রসিংগুলোতে ৩ জন করে গেটম্যান রয়েছে। তারা প্রত্যেকেই ৮ ঘণ্টা করে ২৪ ঘণ্টা গেটে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু অনুমোদনহীন রেল-ক্রসিংয়ের দায় ভার আমাদের নয়।
তিনি আরও বলেন, অনুমোদনহীন যে সকল রেলক্রসিং আছে এগুলোর তথ্য এলজিইডিতে পাঠানো হয়েছে, এ ছাড়াও এসব অনুমতিহীন রেলক্রসিং গুলোর জন্য রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ে আমরা চিঠি পাঠিয়েছি।
মন্তব্য করুন