কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি:
কুমিল্লায় পুজামন্ডপে কোরআন শরীফ অবমাননা’র অভিযোগ তুলে মৌলভীবজারের কমলগঞ্জে উত্তেজিত জনতার মিছিল থেকে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে দুইটি পূজামন্ডপের মূর্তি ও পাঁচটি পূজামন্ডপের গেইট ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে রাত ১০ টার মধ্যে এঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পূজামণ্ডপ গুলোতে আতংক বিরাজ করছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। খবর পেয়ে রাতেই স্থানীয় সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পুজামন্ডপের নিরাপত্তায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কমলগঞ্জে বিজিবি মোতায়েন করা হবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুমিল্লায় পুজামন্ডপে কোরআন শরীফ ‘অবমাননা’র অভিযোগ তুলে বুধবার সন্ধার পর থেকে কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। রাত সাড়ে ৮ টায় মুন্সীবাজার ইউনিয়নের মঈডাইল পুজামন্ডপের মূর্তি ও কামারছড়া চা বাগান পুজামন্ডপের মূর্তি ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। একই সময়ে মুন্সীবাজার ইউনিয়নের বাসুদেবপুর পুজামন্ডপের গেইট, পরবর্তীতে পতনউষার ইউনিয়নের বৃন্দাবনপুর জগন্নাথ জিউর আখড়া পুজা মন্ডপের গেট, বৈরাগির চক সার্বজনীন পুজামন্ডপের গেট, মুন্সীবাজার রামপুর সার্বজনীন পুজা মান্ডপের গেট, লাইট ও নারায়নক্ষেত শব্দকর একাডেমী পুজামন্ডপের গেইট ভাঙচুর করে।
কমলগঞ্জ উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল চন্দ্র দাস বলেন, মুন্সীবাজার মইডাইল পুজা মন্ডপের মূর্তি ভাঙচুর করা হয়েছে। এছাড়া বাসুদেবপুর পুজামন্ডপ, পতনউষার ইউনিয়নের বৃন্দাবনপুর জগন্নাথ জিউর আখড়া পুজা মন্ডপ ও বৈরাগির চক সার্বজনীন পুজামন্ডপের গেট ভাঙচুর করা হয়েছে। বুধবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১০ টার মধ্যে এসব ঘটনা ঘটেছে।
মুন্সীবাজার ইউপি সদস্য সুনীল মালাকার ও রেজাউল করিম নোমান রামপুর সার্বজনীন পুজা মান্ডপ ও নারায়নক্ষেত শব্দকর একাডেমী পুজামন্ডপের গেট ভাঙচুরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রামভজন কৈরী কামারছড়া চা বাগান পুজামন্ডপের মূর্তি ভাঙচুরের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
ঘটনার পর কমলগঞ্জ থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা চালাচ্ছে। এছাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক রফিকুর রহমান,সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ, পৌর মেয়র, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানবৃন্দ সরেজমিনে পরিদর্শন করছেন। কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়ারদৌস হাসান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশেকুল হক বলেন, হামলা ও ভাঙচুরের কথা শুনেছি। আমরা সবগুলো স্থান পরিদর্শন করছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাছাড়া পুজামন্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় রাত থেকেই মন্ডপগুলোতে আনসার বাহিনীর সদস্যরা টহলে থাকবে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিজিবি মোতায়েন করা হবে।
মন্তব্য করুন