ডেস্ক রিপোর্ট। দি সিলেট পোস্ট।
সিলেট-চারখাই-শেওলা মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পে তিন বিঘা (এক একর) জমি অধিগ্রহণে ২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতি কিলোমিটারে পরামর্শক ব্যয় ২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। এছাড়া কর্মকর্তাদের বিদেশ প্রশিক্ষণেও একই পরিমাণ টাকা ধরা হয়েছে। এসব ব্যয়ে আপত্তি জানিয়ে যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ।
জানা যায়, ৪২ দশমিক ৯৮ কিলোমিটার চার লেনে উন্নীত প্রকল্পে ১৯৪ দশমিক ১৩ একর জমি অধিগ্রহণে ৪৯৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এছাড়া মোট পরামর্শক ব্যয় ১০৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। সাইট ফ্যাসিলিটিজের আওতায় কনস্ট্রাকশন সাইট ম্যানেজমেন্ট সুপারভিশন ও কন্ট্রোল খাতে ৯৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। পুনর্বাসন খাতে ২৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
সিলেট শহরের ক্বিন ব্রিজের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে এক কিলোমিটার দূরে কদমতলী থেকে মহাসড়কটি শুরু হয়ে ভারতের সীমান্তসংলগ্ন শেওলা স্থলবন্দরে গিয়ে শেষ হবে। এ প্রকল্পে ২ হাজার ৬০৪ কোটি ৬ লাখ ৪৬ হাজার টাকা বিশ্বব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ পাঁচ বছর ধরা হয়েছে, যা ২০২৭ সালের জুনে শেষ হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে সওজ। ৩ হাজার ৮৭২ কোটি ৩২ লাখ ৩৮ হাজার টাকার প্রকল্পের জন্য ১৭টি যানবাহন ক্রয়ে ৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। আবার গাড়ি ভাড়া বাবদ ৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। কর্মকর্তাদের বিদেশে প্রশিক্ষণের জন্য ২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। তবে এসব ব্যয়ে ২৪ আগস্ট পরিকল্পনা কমিশনের সভায় আপত্তি দেওয়া হয়।
বিষয়টি স্বীকার করে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সাব্বির হাসান খান যুগান্তরকে জানান, প্রস্তাবিত প্রকল্পের কয়েকটি খাতে পরিকল্পনা কমিশন সংশোধন করতে বলেছে। জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে জমি অধিগ্রহণের ধারণা নেওয়া ছাড়াই ব্যয় ধরার কথা তিনি স্বীকার করেন। জেলা প্রশাসকের প্রতিবেদন অনুযায়ী শিগগিরই প্রকল্পের সংশোধন করা হবে। চলতি বছরেই প্রকল্পের অনুমোদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। জানা যায়, সিলেট-চারখাই-শেওলা মহাসড়কটি বিসিআইএস করিডর এবং সাসেক রোড করিডর-৫ এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ। চীনের ইউনান প্রদেশ, মিয়ানমার, ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর সঙ্গে মহাসড়কটি করিডর সংযোগ স্থাপন করবে। ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর সঙ্গেও সংযুক্ত করবে।
ভৌত অবকাঠামো বিভাগের আপত্তি-সাড়ে ৪৪ লাখ ঘনমিটার মাটির কাজের প্রস্তাব করা হলেও সড়ক বাঁধের উচ্চতা কত হবে, তা উল্লেখ করা হয়নি। আউটসোর্সিং খাতে জনবল সংস্থান প্রস্তাবের পক্ষে অর্থ বিভাগের জনবল কমিটির সভার কোনো সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। প্রকল্পের আওতায় ছয়টি জিপ কিনতে খরচ ৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা। চারটি পিকআপ কিনতে ২ কোটি ৩২ লাখ টাকা। ৪৫ লাখ টাকায় একটি মাইক্রোবাস। ১২ লাখ টাকায় ৬টি মোটরসাইকেল কেনা হবে। জনবল কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে চালকের সংখ্যা অনুযায়ী যানবাহনের সংখ্যা ও ব্যয় নির্ধারণ করতে হবে। ভৌত অবকাঠামো বিভাগ বলছে, প্রকল্পের বিভিন্ন খাতে ব্যয় যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনার জন্য পিইসি সভা থেকে সুপারিশ করা হয়েছে। কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে ডিপিপিকে পুনর্গঠন করতে বলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন