বশীর উদ্দীন আহমেদ
চালইন মানে ছাকনি বা স্ট্রেইনার যার সারা গায়ে ছিদ্র। “আল-রাসি অয়ালা মুরতাসি ফীন্নার”- আল-হাদিস। “ঘূষ দাতা এবং গ্রহনকারী উভয়েই জাহান্নামী “আল-হাদিস। “ইজলে বরুণরে বাছইন, তান মাঝেনি টেমটূম আছইন -ছিলটি প্রবাদ। সবাই “গু” খায় ,সাবরেজিস্ট্রারের উপর দিয়ে দোষ যায়। ঘূশের টাকা গ্রহন করেন দলিল লেখক রুপী দালালরা। তারা সাব-রেজিস্ট্রারকে কত দেন আদৌ দেন কিনা সেটা ঘূষ দাতা জানেনই না। তারা তাদের কাম সারলেই খূশী। সর্ব অঙ্গে ব্যাথা,মলম দিব কোথা? এর মধ্যে আবার তেজগাও সাব-রেজিস্ট্রী অফিসে আবার এক ঘণ্টা নামাজের ছূটি-যারে কয় ভূতের মূখে রামনাম।
সম্প্রতি কমলগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রী অফিসের ঘূষ ক্যালেংকারী নিয়ে দলিল লেখকদের প্রতিবাদ শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রতি অধমের দৃস্টি আকৃস্ট হয়েছে। অন্ধকার দিয়ে অন্ধকার দূর করা যায় না। অতিসম্প্রতি স্বদেশে প্রায় ৭০ দিন ছিলাম। হাদিয়া বা সালামী ছাড়া কোথাও কোন কাজ হয় বলে মনে করার কোন যূক্তি সঙ্গত কারণ দেখিনা। যারা প্রতিবাদ করছেন তারা কি দূধে ধূয়া তূলসী পাতা। এরা সাব-রেজিস্ট্রারের পক্ষে ঘূষ গ্রহন করে। বেলা শেষে দেয়ার বেলায় কম দেয় নেয়ার সময় বেশী নেয়। এরা শাখের করাত। দুই দিকেই কাটে। এরা ঘূষখোরীর মাধ্যম ইন্দন দাতা। এরা কি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে তারা নিজেরা সৎ? কাটা দিয়ে কাটা তুলা যায়, কিন্তু অন্ধকার দিয়ে অন্ধকার দূর করা যায় না।পাবলিক ও অসৎ, তারা লক্ষ টাকার জায়গায় ২০/২৫ হাজারে দলিল করে। ফলে ঘূষ দিতেই হয়, সাব-রেজিস্ট্রার একা খায়না। সারা অফিসের লোক খায়। সাব-রেজিস্ট্রার যা’ পায় তা’থেকে ডিআর কে মাসূহারা দিতে হয়। ডিআরকে দিতে হয় তার উপরওয়াকে। এই সিলসিলা বহূ উপর পর্য্যন্ত জারী আছে। তাদের কথা মত আকাম না করলেই সাব-রেজিস্ট্রার ঘূষখোর আর তারা দুধে ধূয়া তূলসী পাতা। তারা কেন সাব-রেজিস্ট্রারের পক্ষে ঘূষ লেন দেন করে যদি তারা সৎ হয়ে থাকে? সাব-রেজিস্ট্রার তো সরাসরি ঘূষ নেয় না। এই দালালদের মাধ্যমে নেয়, দালালরা বড় অংক নেয় ছোট অংক দেয় -ঝামেলা বাধে সেখানে থেকে। বর্তমান সাব-রেজিস্ট্রার লেখালেখি লাইনের লোক তিনি বঙ্গ বন্ধুর উপর চমৎকার পূস্তক সম্পাদনা করেছেন। সৌজন্য সাক্ষাতে এওটি বই এই অধমকেও উপহার দিয়েছেন। প্রথম দৃস্টেই উনাকে এক জন ভদ্রলোক বলে অধমের অন্তরে দৃঢ় প্রত্যয় জন্মেছে। এর আগে তিনি জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে ছিলেন। এই চাকুরীতে নূতন তাই ভেবে চিনতে কাজ করেন, বিধি সম্মত না হলে অস্বীকার করেন বিপত্তি সেখানেই।
এখানে কেউ হারে না, ক্রেতা বিক্রেতা- মহরির- অফিস সবাই লাভবান হয়। ক্ষতি গ্রস্থ হয় সরকারি কোষাগার। পানির দামে রেজিস্ট্রি করে কর ফাকী দেয়া হয়। নূতন চাকুরী এর আগে জাতীয় সংসদে ছিলেন তাই চুলচেরা বিশ্লেষন করেন। দালালদের কথা মত সাইন করেন না। আইনানুগ হচ্ছে কিতা দেখেন। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে, উনার সহধর্মীনিও একই পদে অন্যত্র কাজ করছেন। দালালরা সব সময় দুই নাম্বারী কেইস নিয়ে আসে। সাইন না করলেই ঘুষখোর, প্রয়োজনীয় ডকূমেন্ট দেখাতে পারেনা,ধামা চাপা দিয়ে রেজিস্ট্রি করিয়ে নিতে চায়। নূতন চাকুরি বিধায় উনি ভ্ল ভাবে দেখেন। বিধি সম্মত না হলে রিজেক্ট করেনএটাই তার দোষ। দালালরা মধ্যস্বত্ত ভোগী আবার অফিসারকে চোর বানাতে চায়। এই দৃশ্য পুরো বাংলাদেশে। সবাই “গু” খায় ,সাব-রেজিস্ট্রারের উপর দোষ যায়। সব-রেজিস্ট্রার যদি ঘুষখোর হয়ে থাকেন তাহলে তার পক্ষে এই ঘূষের লেনদেন যারা করে তারা কি? আর যারা লক্ষ টাকার সম্পদ ২০/২৫ হাজারে রেজিস্ট্রী করিয়ে সরকারি টেক্স ফাকি দিতে আসে তারা কি আল্লাহর খাস পীয়ারা বান্দা? পুরো সেট আপ পাল্টাতে হবে। গোয়ালে দূস্ট গরু রেখে শুধু শুধু রাখাল পাল্টিয়ে কোন ফায়দা হবেনা।
কমলগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের প্রহরি, আরে বাবা বাশের চেয়ে কঞ্চি বড়, চা-য়ের চেয়ে পেয়ালা গরম। দেখাই করা যাবে না,মন্ত্রীর সাথে দেখা করা বরং সহজ -দেয়াল হয়ে দাঁড়ায় এই প্রহরী। দালালরা এমন কাজ নিয়ে আসে যা’ বিধি মোতাবেক করাই যায় না। করলে সাব-রেজিস্ট্রারের চাকুরী থাকবে। তখনই বাধে বিপত্তি,সাবরেস্ট্রার খারাপ। আর বাকীরা আছমানের তারা। আমরা বাস সিএন-জি রক্সা স্ট্যান্ডে চাদাবাজি করি আবার ঘূষ দূর্নীতির প্রতিবাদ ও করি। আমরা ফুটপাতের হকারদের কাছ থেকে চাদা নেই নিয়নিত আবার দূর্নীতি দমন কমিটির ও একজন থাকি। আমরা ঠিকাদার থেকে কমিশন খাই আবার দূর্নীতির বিরুদ্ধে কলম চালাই।
কোন অফিসের কোন কর্মকর্তাই একা একা ঘূষ খেতে পারেনা। উপরওয়ালা নীচওয়ালা সবার সহযোগীতা লাগে এবং সবাইকে দিয়ে থূইয়ে আফোসে মহব্বতের ভিতর দিয়েই কাজকাম চলে। যেখানে রেইট ফিক্সড সেখানে বিপত্তি বাঁধার কোন কারণ থাকতে পারেনা। বর্তমান সরকার বাহাদুর দুই তিন দফায় প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা কর্মচারদের বেতন দ্বিগূণ করেছেন। ঘূষ না খেলেও খেয়ে পরে বাচতে পারবে,তবুও খায়। এই সিলসিলা এক দিনে জারী হয়নি। সালামি দিতে হয় নইলে ভাল পোস্টিং পায়া যায়না। আবার নিয়মিত হাদিয়া উপরে প্রেরণ না করলে পদে থাকা যায় না। স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দি পার, ভগবানের লীলা বুঝা বড়ই ভার। দূর্নীতি করে পার পাওয়া যায় তাই দূর্নীতি শাখা প্রশাখা বিস্তার করে মহীরুহের আকার ধারণ করেছে। মাঝ খান থেকে দু’একটা ডাল ভাঙ্গলে লাভ হবে না। শেকড় সহ এই বিষ বৃক্ষকে উপড়ে ফেলতে হবে। আগে নিজেকে সৎ হয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। অন্ধকার দিয়ে অন্ধকার দূর হবেনা, চাই আলো। বদলী কোন সমস্যার সমাধান নয়, চাই কারেকশন বা সংশোধন। বদলী হয়ে যিনি আসবেন তিনি যে ফেরাস্তা হবেন তার কি কোন গ্যারাণ্টী আছে?
এই মূহহুর্তে যা’ প্রয়োজন তা’হচ্ছেঃ-আত্মার পরিশুদ্ধি বা তাস্কিয়াতুন্নফস মিনিং “পিউরিফিকেশন অব সৌল”! আমাদের নিজেদের চরিত্র আগে সংশোধন করা চাই।
পরিশেষে,অতি সম্প্রতি সৌজন্য স্বাক্ষাতে কমলগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রার মহোদয় বঙ্গবন্ধুর উপর তারা নিজের সম্পাদিত বই উপহার দেন।
কপ্ন ভুক্তভোগী ভূমিদাতা বা গ্রহীতা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেননি। অভিযোগ এনেছেন তারই অফিস সংশ্লিস্ট মহরিরগ্ণ যারা এ’কাজে তার সহযোগী এবং যাদের সততা সর্বদাই প্রশ্নবিদ্ধ।
জার্নালিষ্ট ,আটলাণ্টা ,জর্জিয়া
মন্তব্য করুন