রফিকুল ইসলাম জসিম
৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে প্রতিবছর এ দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপিত হয়ে আসছে। ১৯১০ সালের ৮ মার্চ কোপেনহেগেন শহরে অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে জার্মানির নারী নেত্রী কারা জেটকিন এ দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেন। ১৯১১ সালে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়। ১৯৮৫ সালে ৮ মার্চকে জাতিসংঘও আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। বাংলাদেশে ১৯৯১ সাল প্রথম এ দিবস পালন করা হয়৷ এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় ‘‘নারীর সুস্বাস্থ্য ও জাগরণ’’।
আজকে নারীদের জন্য নিবেদিত গোটা একটা দিন। এদিনটিকে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন হিসেবে বিশ্বজুড়ে চিহ্নিত করা হয়। নারী দিবস নিয়ে বাংলাদেশ বসবাসরত মনিপুরি মুসলিমানের অনেক চড়াই-উৎরাই পার করে স্বনামে প্রতিষ্ঠিত ৫ নারী কি ভাবছেন তা তুলে ধরা ধরেছেন- রফিকুল ইসলাম জসিম।
কমলগঞ্জ উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছাঃ বিলকিস বেগম বলেন, বাংলাদেশে সময়টা এখন নারীর। সত্যিকারার্থেই দেশে চলছে নারীর ক্ষমতায়ন। নারীর সংস্পর্শে বদলে যাচ্ছে গ্রাম-শহরের কর্ম জীবনধারা। দেশের নারী সমাজ দ্রুত বদলে যাচ্ছে। তারা বদলে দিচ্ছে দেশকেও। ক্ষমতায়ণের দিক থেকে নারীরা সবচেয়ে এগিয়ে গেছে। সুতরাং নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক বিশ্বে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
আমাদের দেশে নারী ক্ষমতায়ণে অনেক দূর এগিয়েছে। তারা নানাভাবে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে অবদান রাখছে। আগের মতো তাদের গোঁড়ামি নেই। তারা আগে ঘরের বাইরে যেতো না। এখন তারা ঘর থেকে বের হচ্ছে। যারা শিক্ষিত হচ্ছে তারা বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। এজন্য তারা ঋণও পাচ্ছে সরকারি ও বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে। ফলে তাদের জীবন পাল্টে যাচ্ছে। পাল্টে যাওয়ায় তারা আজ সমাজে অবহেলিত নয়। সমাজকে তারা অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে প্রভান্বিত করছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ পুনর্গঠনে নারীদের সম্পৃক্ত করেছিলেন। তিনি দেশের পবিত্র সংবিধানে রাষ্ট্রীয় ও সমাজ জীবনের সব কর্মকাণ্ডে নারীর অধিকার নিশ্চিত করেছেন। “মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও একজন সফল নারী, সফল রাষ্ট্রনায়ক তিন তিন বারের রাষ্ট্র নায়ক, তিনি শুধু আমাদের অনন্য নারী মডেল নন, একই সাথে বিশ্ব নারী ক্ষমতায়নের উজ্জ্বল নক্ষত্র।” নারীরপ্রতি সবরকম বৈষম্য ও অন্যায়-অবিচারের অবসান ঘটিয়ে একটিসুখী, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক বিশ্বগড়ার কাজে পুরুষের সমান অবদান রাখার প্রত্যয় নিয়ে নারীর এগিয়ে চলা আরও বেগবান হোক।
মোছাঃ বিলকিস বেগম, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, কমলগঞ্জ।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডেন্টাল সার্জন ডা.তারানা জেবিন জানান, বাংলাদেশ বলে কথা নয়,যে কোন উন্নয়নশীল দেশে নারীদের মানসিক ও শারীরিক ভাবে দূর্বল বলেই ধরে নেয়া হয়।ধরে নেয়া হয়, নারীদের মনোবল, বিচার ও বিবেচনাবোধ পুরুষের তুলনায় কম। কোন বড় সিদ্ধান্তমূলক কাজে অথবা সমাজের কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজে নারীদের দমিয়ে রাখা হয়।বিশ্বে যতই আধুনিকতার ছোঁয়া লাগুক আর নারীরা শিক্ষাক্ষেত্রে, পেশাক্ষেত্রে যতই এগিয়ে যাক না কেন সমাজের ধারণাগুলোতে এখনো আধুনিকতার ছোঁয়া লাগতে পারেনি।
সরকারি স্বাস্থ্যসেবায় নারী জনবল উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাচ্ছে। তবে উচ্চ ও নীতি নির্ধারনী পদগুলোতে নারীর সংখ্যা খুব কম। বারডেম হাসপাতালের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক নাজমুন নাহার বলেন ” স্বাস্থ্যসেবা দানকারী নারীর সংখ্যা বাড়ছে এটা সত্যি। কিন্তু উচ্চপদে ও নীতি নির্ধারনী পদগুলোতে কেন নারীর সংখ্যা কম, সেটাই আজকের দিনের বড় প্রশ্ন। ” তিনি আরও বলেন ” যুক্তি দেখানো হয় যে যোগ্য নারী নেই। কিন্তু নারীকে যোগ্য করে তোলার জন্যে ঢ়ে পদক্ষেপ বা উদ্যোগ নেয়া দরকার বা যে নীতি গ্রহণ করা দরকার তা নেয়া হচ্ছে না।” পুরুষ চিকিৎসদের পাশাপাশি নারী চিকিৎসকরাও দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে পদায়ন হয়।কিন্তু মাঝে মাঝে নিরাপত্তাটা বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।
আর পারিবারিক ক্ষেত্রে আমি নিজের প্রেক্ষাপট থেকে বলবো… পারিবারিক সহায়তা না থাকলে একজন নারীর কখনোই সামনে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।আমার শিক্ষক বাবা, মা আমাদের চার বোনের পড়াশোনার জন্যে অনেক ত্যাগ করেছেন। ‘মেয়েদের এত খরচ করে পড়ানোর কি দরকার’ এই কথাগুলো বলা মানুষগুলোর কথা কানেই তুলেন নি।এখনো আমার শ্বশুরবাড়িতে আমি পড়তে বসলে,আমি হাসপাতালে যাতে নিশ্চিন্তে যেতে পারি তাই আমাকে সবধরনের সহযোগিতা করা হয়।
বিশ্ব নারী দিবস – ২০২২’ জাতিসংঘ নারী দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করেছে ” নারীর সুস্বাস্থ্য ও জাগরণ।”এই মূল প্রতিপাদ্যের আলোকে মহিলা ওশিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে – টেকসই আগামীর জন্য, জেন্ডার সমতাই অগ্রগণ্য। ” সেই হিসেবে আমি বলবো পুরুষের তুলনায় নারীরা অনেক পিছিয়ে। এখনো অনেক নারী নিগৃহীত হয়,mental & physical violence এর শিকার হয়।সেটা ঘরে, বাইরে অথবা কর্মক্ষেত্রেও হতে পারে।
তবে আশার বিষয় হলো বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার নারীর শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়নের উপর জোর দিয়েছেন। শিক্ষা, চিকিৎসা এমনকি বিভিন্ন চ্যালেন্জিং পেশা যেমন পুলিশ, প্রশাসন, সেনাবাহিনী সর্বক্ষেত্রে নারীদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। সর্বোপরি আমি বলবো নারী ও পুরুষ একে অপরের পরিপূরক। সমাজকে সুন্দর,সুস্থ্য ও স্বাস্থ্যকর গড়ে তুলতে গেলে সমানভাবে নারী ও পুরুষকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল নারী……জয় বাংলা।
ডা.তারানা জেবিন, ডেন্টাল সার্জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমলগঞ্জ
নারী উদ্যোক্তা ও লেখিকা মাহবুবা সুলতানা শিউলি বলেন, আমি একজন মানুষ তারপর আমি একজন নারী, আমি কারো মা, কারো স্ত্রী, কারো মেয়ে, কারো বোন, কারো ভাবী, কারো ননদ, এরকম নানান আত্মীয়তা সম্পর্কের পরিচয়ের পাশাপাশি আমি একজন লেখক, একজন পাঠক, একজন বাচিক শিল্পী, একজন সমাজকর্মী, একজন প্রতিবাদী নারী। আবার এই আমিই একজন উদ্যোক্তা, একজন গৃহিনী। আমি কি কি কাজ করি? রান্না করি, বাজার করি, ঘর গোছাই, ফার্নিচার মুছি, বাথরুম পরিষ্কার করি, মশারী টাঙ্গাই, বাগান করি, গাছ লাগাই, গাছের যত্ন নিই, পানি দিই। এই আমিই আবার আমার বাচ্চাদের পড়াই, শাসন করি, খুনসুটি করি, আড্ডা দিই, বাচ্চাদের স্কুলে আনা-নেওয়া করি। সময়মত প্রার্থনা করি। পরিবারের সবার খেয়াল রাখি, যত্ন নিই। পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসকের ও নার্সের ভুমিকাও আমাকেই পালন করতে হয় আবার ব্যবসায়িক কাজে স্বামীর সহকর্মী, সহযোগী হিসেবে কাজ করি, অফিস করি। অফিসের সকল ডকুমেন্টস আমার নখদর্পনে আছে। আবার এই আমিই স্বামীর সাথে প্রেম করি, স্বামীর সেবা করি। কি না করি! এখন আবার নারী উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে আলাদা পরিচয়ে পরিচিত করার জন্য দিনরাত পরিশ্রম করি।
আমি নারী, আমি মানুষ। তবে মাঝেমাঝে মনেহয় আমার জীবনটা আমার নিজের নয়। তারপরও দুঃখ নেই…আজ ৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও এ দিবসটি পালিত হয়। নারী লিঙ্গের সাম্য প্রতিষ্ঠায় এ দিনটি বেশ তাৎপর্য পূর্ণ। এই দিবসে একজন নারী কত কি করে, করতে পারে তা নিজের উদাহরণ দিয়ে জানিয়ে দিলাম। জেনে রাখুন, ” বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর”। “কোন কালে একা হয়নি কো জয়ী, পুরুষের তরবারি, প্রেরণা দিয়েছে শক্তি দিয়েছে, বিজয়ালক্ষ্মী নারী”। বিশ্ব নারী দিবসে সকল নারীদের প্রতি আহ্বান- জেগে উঠুন নিজ মহিমায় – কর্মে, সৃজনে, অর্জনে। বিশ্বে, নারী নিজ যোগ্যতা দিয়ে নিজেদের স্থান তৈরি করে নিয়েছে।
করুনা নয়, কর্ম দিয়ে নারীর পরিচয়। মনে রাখুন, একজন নারী ঠিক তো সব ঠিক। তাই হাজারো প্রতিবন্ধতার মাঝেও প্রতিনিয়ত প্রচেষ্টায় আছি। কর্মে আছি প্রতিটি মুহূর্তে। অর্জন নামমাত্র আর সৃজন তা চলবে অন্তহীন …… জানি না মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভালো কিছু সৃজন করতে পারবো কিনা!
সবশেষে বলতে চাই নারীকে বুঝার চেষ্টা করুন, নারীকে মুল্যায়ন করুন, নারীকে সময় দিন, সম্মান দিন। নারী আমার মা, নারী আমার স্ত্রী, নারী আমার বোন, নারী আমার কন্যা… এই বোধ যার মধ্যে প্রখর সেই একজন প্রকৃত মানুষ। সবাই ভালো থাকুন। সবাইকে নারী দিবসের শুভেচ্ছা।
মাহবুবা সুলতানা শিউলি নারী উদ্যোক্তা ও লেখিকা।
তেতই গাঁও রসিদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মোছাঃ শাহেনা বেগম জানান, সবচেয়ে বড় সমস্যা মেয়েদের শিক্ষা৷ মেয়েদের ব্যাপকভাবে লেখাপড়া শেখাতে হবে৷ মেয়ারা শিক্ষিত হলে সমাজের অনেক সমস্যা দূর হবে। মেয়েরা শিক্ষিত হলে সমাজের অনেক সমস্যা দূর হয়ে যাবে বলে বিশ্বাস করি৷ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মেয়েদের স্বাবলম্বী করে তুলতে হবে৷ মেধা ও অনুযায়ী তাদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের সুযোগ আরও সম্প্রসারিত হাওয়া প্রয়োজন৷
জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে নারীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। নারী জাগরণের অগ্রদূত হিসেবে আমি প্রথমে বলবো বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের কথা৷ তিনি সেই সময়ের নারী শিক্ষা উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে শিক্ষা ছাড়া নারীরা এগিয়ে আসতে পারবেন না তাই তিনি মেয়েদের স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন৷ নারী শিক্ষায় শিক্ষিত না হলে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। নারী শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম।
প্রাচীন কালে নারীরা সব কিছু স্বামীর উপর সবকিছু নির্ভরশীল ছিল। তারা ছিল অবহেলিত ও নির্যাতিত গৃহের কাজের মধ্যে নারীদের কার্যাদি সীমাবদ্ধ ছিল৷ আজ নারীরা শিক্ষিত হাওয়ার পাশাপাশি ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, পুলিশ অফিসার। এমন কি সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করছে। শুধু তাই নয় আমাদের দেশে প্রধানমন্ত্রী একজন নারী, স্পীকার নারী৷
নারী ও পুরুষ মিলে পরিবার ও সমাজ। নারীকে ছাড়া সমাজ উন্নতি করতে পারে না। যেমন, গাড়ীর চার চাকার মধ্যে একটি চাকা নষ্ট হয়ে গেলে যেমন গাড়ী চলতে পারে না। তেমনি নারী ছাড়া সমাজ উন্নতি হয়না৷ নারীরা বাইরে যেমন কাজ করছে তেমনি গৃহস্থালীর কাজ ও সমান পারদর্শী।
সমাজে কিছু নারী এগিয়ে আসছে কিন্তু প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এখনো পিছিয়ে আছে৷ বাংলাদেশের সরকার নারী শিক্ষার প্রসারে স্কুল কলেজ পর্যায়ে মেয়েদের জন্য উপবৃত্তির ব্যাবস্থা করছে। নারী শিক্ষার বিষয়ে অবিভাবকদের সচেতনতা প্রয়োজন৷ বিশেষত মায়েদের কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন সংগঠন গড়ে তুলতে হবে৷ অবিভাবকদের বুঝাতে হবে শুধু ছেলে নয় মেয়েরাও বাবা মায়ের ভরসাস্থল হতে পারে৷ নারী যে একটা সম্পদ সেটা অনেক অভিভাবক বুঝতে চাই না যার কারণে দূরে কোথাও পড়াশোনা জন্য পাঠাতে চাই না৷ নারী উন্নয়ন ঘটাতে হলে নারী নিজেকে এগিয়ে আসতে হবে৷
মোছাঃ শাহেনা বেগম প্রধান শিক্ষক, তেতই গাঁও রসিদ উচ্চ বিদ্যালয়।
কবি ও সাহিত্যিক রওশন আরা বাঁশি খুৎহৈবম জানান, নারীরা মেধাবী সাহিত্যমনা ভালো লিখতে পারে। হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া নারীরা প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পাইনি। একজন নারীকে কোন না কোন ভাবে সাংসারিক নানা কাজে সারাক্ষণ মনোনিবেশ করতে হয়। তাছাড়া পারিবারিক সাপোর্ট থাকাটা একটি বড় ব্যাপার। পাশে লোকে কিছু বলে এ ভয়টাও নারীকে মনের ভাব প্রকাশে দমিয়ে রাখে। সুস্থ কাব্য চর্চায় গঠনমূলক মন্তব্য ও সহযোগিতার অভাব এবং অর্থনৈতিক সাপোর্টের ব্যাপারটাও একটি কারন। এসব পরিস্থিতি থেকে নারীরা নিরুৎসাহী হয়ে নিজেকে গুটিয়ে রাখে।
এ বছর নারী দিবসে জাতিসংঘের স্লোগান “নারীর সুস্বাস্থ্য ও জাগরণ” এ কথাকে সামনে রেখে নারীদের এগিয়ে চলা আরো বেগবান হোক–এ কামনা করি। নিজের ইচ্ছে শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সকল প্রতিবন্ধকতা ও বাঁধা পেড়িয়ে যুগে যুগে অনেক মহীয়সী নারীরা বাংলা সাহিত্যে অবদান রেখে গেছেন। তাঁদের অনুকরণ অনুসরণে বর্তমান যুগের নারীরাও সাহিত্যে বড় অংশে ভূমিকা রেখে চলেছে। একজন সাহিত্য প্রেমী হিসেবে আমি মনে করি অনেক ক্ষেত্রে কাছের মানুষের অনুপ্রেরনা ও সহযোগিতা একজন নারীর মেধাশক্তি ও ইচ্ছে আকাঙ্খাকে সামনে চলার পথ সহজ ও সুগম করবে এবং সাহিত্যে বড় ধরনের অবদান রাখতে পারবে।বিশ্ব আরো এগিয়ে যাবে।
বাংলাদেশে অন্যান্য সূচকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে একবিংশ শতকের বাংলাদেশে লেখালেখিতেও মেয়েরা অগ্রভাগে আসুক। যেমনটা নারী প্রধানমন্ত্রী, নারী স্পিকার, নারী বিরোধীদলের নেতা; তেমনটাই লেখালেখির জগতে দেশের জমিন ডিঙিয়ে বিদেশের মাটিতেও আমাদের মেয়েরা বাজিমাত করুক। আজ ৮ই মার্চ বিশ্ব নারী দিবস। এ দিবসে আমি আমার অবস্হান থেকে বলতে চাই–সকল ক্ষেত্রে নারীর সফল অংশ গ্রহনে দেশ আজ উন্নয়নে এগিয়ে যাচ্ছে। নারী বৈষম্য ও বিরুপ প্রতিক্রিয়া একটি জাতির উন্নয়নে বাধাস্বরূপ।
রওশন আরা বাঁশি খুৎহৈবম কবি ও সাহিত্যিক,
মন্তব্য করুন