বড়লেখা প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলাধীন বর্ণি ইউনিয়ন। ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড পাকশাইল। এই গ্রামেই ১৯৬ বছর আগে স্থাপিত হয়েছিলো ইতিহাস ও ঐহিত্যের প্রাচীন জামে মসজিদ।
১৮২৫ সালে গ্রামবাসীর উদ্দোগে স্থাপিত হয় এই মসজিদ। স্থানীয় প্রবীণ লোকদের মাধ্যমে জানাযায়, প্রথমে টিনের দেয়াল ও চাল দিয়ে ভিত্তি স্থাপন করা হয় বড়লেখা উপজেলার অন্যতম ও বর্ণি ইউনিয়নের সবচেয়ে প্রাচিন এই মসজিদটির।
প্রথম দিকে ছোট পরিসরে মসজিদটি নির্মাণ করলেও কালের পরিক্রমায় আস্তেআস্তে মসজিদটির আয়তন বড় হয়েছে বলে জানিয়েছেন মসজিদের নিয়মিত নামাজী মক্তদির আলী।
আরো পড়ুনঃ কুলাউড়ার আলোচিত সেই সামাজিক বনায়ন কার্যক্রমে আদালতের অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা
সরজমিনে ঐ মসজিদে গিয়ে জানাযায়, প্রায় ২৪ শতক জমির উপর মসজিদটি নির্মিত হয়েছে। এক পরিবারের ৩ ভাই সুনাম উদ্দিন, আজব উদ্দিন, সরফ উদ্দিন মসজিদের জন্য জমি দান করেন। পাকশাইল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রথমে টিন দিয়ে তৈরি করা হয়। পরবর্তিতে ১৯৫৫ সালে ৩ গুম্বুজ নকশায় মসজিদটি তৈরি করা হয়। আর সবশেষে ১৯৯১ সালে মসজিদটি পূনর্নির্মানের উদ্দোগ নেয় গ্রামবাসী।
মসজিদটির সার্বক্ষণিক পরিচর্যাকারী ও মসজিদ কমিটির সেক্রেটারী সাদ উদ্দিন বলেন, প্রতিষ্টালগ্ন থেকে গ্রামের বিত্তবান ও প্রবাসীদের অর্থায়নে মসজিদের যাবতীয় কাজ করানো হয়। কখনো কোনদিন সরকারি বা কোন বেসরকারি সংস্থার সহযোগীতা করার প্রয়োজন হয়নি। কিছুদিন আগেই মসজিদের সংস্কার কাজ করা হয়। এতে প্রায় ২৫-৩০ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে। যার সব টাকাই গ্রামবাসীরা বহন করেছেন।
তিনি আরো বলেন, দিনদিন মানুষের সংখ্যা যতই বাড়ছে মসজিদটি ততই বড় করার প্রয়োজন পরছে। তাই সরকারি অথবা কোন বৃহত্তর সহযোগীতা পেলে আমরা মসজিদটি ভেঙ্গে নতুন করে এই শতবর্ষী মসজিদটি পুনর্নির্মাণের উদ্দোগ নিতে পারি। তবে তা হয়তোবা আরো অনেক সময় লাগতে পারে।
পাকশাইল গ্রামে আরো ৫টি মসজিদ থাকলেও প্রতি শুক্রবারে পুরো গ্রামের মানুষজন একসাথে মিলে এই মসজিদেই নামাজ আদায় করেন।
মসজিদের ইমাম মাওলানা কামরুল ইসলাম বলেন, আমি দীর্ঘ ৫ বছর থেকে এই মসজিদে ইমামতি করছি। এরকম একটি প্রাচীন মসজিদের ইমামের দ্বায়িত্ব পালন করতে পেরে নিজেকে গর্বিতবোধ করছি।
বর্তমানে দুইতলা বিশিষ্ট এই মসজিদের আকর্ষনিয় দিকটি হচ্ছে মসজিদের ডিজাইন। বাহারি টাইলস দ্বারা মসজিদটি সাজানো হওয়ায় যে কারো মন সহজে ভরে যায়। তাছাড়া মসজিদের সামনে রয়েছে পুরনো একটি পুকুর।
পাকশাইল ওয়ার্ডের ৫ বারের নির্বাচিত ও বর্তমান মেম্বার কদর উদ্দিন বলেন, গ্রামবাসির উদ্দোগে নির্মিত এই মসজিদ নিশ্চই অনেক ইতিহাস বহন করে। সরকারি কোন অনুদান পেলে অবশ্য মসজিদটি ভেঙ্গে নতুন করে নির্মানের পরিকল্পনা আছে।
মন্তব্য করুন