খাদেমুল ইসলাম, তেঁতুলিয়া
বাংলাদেশের ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের ৫০ বছরের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করলো প্রতিবেশী রাষ্ট্র বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারত।গত ১৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ি আইসিপি পয়েন্টে এই সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের আয়োজন করে ভারত। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে শুভ উদ্বোধন করেন বিএসএফের নর্থ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার আইজি রবি গান্ধী।
এ ময় উপস্থিত ছিলেন ১৭৬ বিএসএফ কমান্ডেন্ট এসএস সিরোহি এবং পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি অধিনায়ক লেঃ কর্নেল গোলাম ফজলে রাব্বি প্রমুখ। বাংলার স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ-ভারতের কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা আমন্ত্রণ জানানো হয়। যারা ভারতের সহযোগিতায় মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে লড়াই করেছেন। তাদেরকে বিশেষ সম্মানা জানানো হয়। এ সময় এক বীর মুক্তিযোদ্ধা লেখক তার মুক্তিযুদ্ধের উপর লেখা বই ও বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত জীবনী বই ভারতের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের উপহার দেন। অনুষ্ঠানে সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ আলী, মোস্তাফিজুর রহমান, মোসাদ্দেক হোসেন ও শ্রী এনএম রায়সহ আরও অনেকে বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা বলে শেষ করা যাবে না। মুক্তিযুদ্ধে মিত্র বাহিনীর ভূমিকা রাখতে ভারতকে হারাতে হয়েছিল বহু অফিসার ও সৈনিককে। হারাতে হয়েছে পরিবার ও স্বজন। এতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়। যাঁদের রক্ত এই স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে মিশে রয়েছে। এ আয়োজন করে মুক্তিযোদ্ধাদের যে সম্মান জানানো হলো তার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। এ সময় মুক্তিযোদ্ধারা ভারতের অবদানের কথা প্রকাশ করতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে ভাঙ্গা ভাঙ্গা কন্ঠে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
প্রধান অতিথি নর্থ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার আইজি রবি গান্ধী বলেন, যারা ভারত-বাংলাদেশ থেকে যারা স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন। এই স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা আত্মহুতি কিংবা নিজের জীবনকে বিসর্জন দিয়ে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, আমরা তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। স্বাধীনতার ৫০ বছরে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের আয়োজন করে তাদেরকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের অবদান নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন।
১৮ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্নেল গোলাম ফজলে রাব্বি বলেন, দুই বাংলার মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদানের লক্ষে স্বাধীনতার ৫০ বছর সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠান আয়োজন করায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এ আয়োজনের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে আরও ভাতৃত্ববোধ ও সোহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠবে।বিকেলে ভারত-বাংলা যৌথভাবে বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কুষ্টিয়া থেকে বাউল শিল্পীদের অংশগ্রহণে লালন সংগীত ও ভারতের নর্থ বেঙ্গলের শিল্পীদের নিয়ে সংগীতানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
মন্তব্য করুন