ডেস্ক রিপোর্টঃ
জাতিসংঘ জনসেবা পদক পাওয়ায় দায়বদ্ধতা আরও বেড়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।
তিনি বলেন, পুরস্কার মানে হলো ভালো কাজের স্বীকৃতি। এই স্বীকৃতি বা পুরস্কার যিনি পান, যে প্রতিষ্ঠান পায়- তাদের আরও দায়িত্বশীল হতে উৎসাহ দেয়। দায়বদ্ধতাও আমাদের অনেক বেড়ে গেছে। জনকল্যাণে আমাদেরকে আরও নিষ্ঠা, সততা এবং সব অনিয়ম-দুর্নীতির ঊর্ধ্বে থেকে কাজ করতে হবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ জনসেবা পদক অর্জন উপলক্ষে বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই পুরস্কার প্রাপ্তিতে আমাদের মন্ত্রণালয়ের সবাই এই প্রতিজ্ঞা করেছি, আমরা আগামী দিনগুলোতে আরও সততা, নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করবো। বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণের জন্য, রাষ্ট্রের ভারমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য কাজ করে যাবো।
ডা. এনামুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে ‘জাতিসংঘ জনসেবা পদক, ২০২১’ প্রদান করেছে জাতিসংঘ। ঘুর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচিতে (সিপিপি) নারীর ক্ষমতায়নে উদ্যোগের স্বীকৃতি হিসেবে ‘এসডিজি অর্জনে জেন্ডার-রেসপনসিভ সেবা’ ক্যাটাগরিতে গত ১৩ ডিসেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে জাতিসংঘ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদেরকে এ পদক প্রদান করা হয়।
‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে, মহান বিজয়ের এই মাসে জনসেবায় শ্রেষ্ঠত্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছি। জাতিসংঘের এই পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তি নিঃসন্দেহে শেখ হাসিনার সরকারের অন্যতম সেরা অর্জন।’
বাংলাদেশে এক সময় নারীরা যে কোনো দুর্যোগে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হতো জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কিন্তু এ চিত্র অভাবনীয়ভাবে পাল্টে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় অঙ্গীকার বাস্তবায়নের ফলে নারীরা এখন লিঙ্গ বৈষম্যহীন দুর্যোগ সহনীয় সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের অন্যতম শক্তি হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। তারা দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় পরিবর্তনের দূত হিসেবে গৃহে, কর্মক্ষেত্রে ও সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে।
তিনি আরও বলেন, সিপিপির স্বেচ্ছাসেবক কাঠামোয় নারী স্বেচ্ছাসেবক সংখ্যা পুরুষের এক-তৃতীয়াংশ ছিল। সক্ষমতা, অংশগ্রহণ ও নেতৃত্বেও তারা পিছিয়ে ছিল। এ অসমতা দূর করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২০ সালে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসে সিপিপিতে ১৮ হাজার ৫০৫ জন নতুন নারী স্বেচ্ছাসেবক অন্তর্ভুক্তের বিষয়টি উদ্বোধন করেন।
এনামুর রহমান বলেন, নারীর ব্যাপক অংশগ্রহণের ফলে উপকূলীয় এলাকায় বিশেষত নারীদের মধ্যে দুর্যোগের আগাম প্রস্তুতি, নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় করণীয় সম্পর্কে সচেতনতা লক্ষ্যণীয় হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
দুর্যোগকালে নারীদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। দুর্যোগের আগাম সতর্কবার্তা নারীদের কাছে সহজে পৌঁছাচ্ছে। দুর্যোগকালে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা হ্রাস পেয়েছে। দুর্যোগ সংক্রান্ত তথ্যসমূহে নারীদের অভিগম্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সামগ্রিকভাবে নারীদের দুর্যোগ ঝুঁকি কমছে, যোগ করেন দুর্যোগ ব্যবস্থা প্রতিমন্ত্রী।
এ পুরস্কার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে উৎসর্গ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, একইসঙ্গে এ পর্যন্ত আত্মত্যাগী ২৭ জন স্বেচ্ছাসেবককে স্মরণ করছি।
সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. মোহসীনসহ মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন