ডেস্ক রিপোর্টঃ
৩০০ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণার পর টেস্ট জমিয়ে তুলেছে পাকিস্তান। প্রথম ইনিংসেই বাংলাদেশের ৭ উইকেট তারা তুলে নিয়েছে। সাজিদের স্পিনে ধুঁকতে থাকা স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ৭২ রান। বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে ২২৮ রানে। ক্রিজে আছেন সাকিব (১৯) ও তাইজুল (০)।
ধৈর্য্য পরীক্ষায় শুরু থেকেই ব্যর্থ ছিল টপ অর্ডার ব্যাটাররা। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী মাহমুদুল হাসান জয় আউট হয়েছেন তৃতীয় ওভারে। সাজিদ খানের অফস্পিনে একটু এগিয়ে এসে খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আউটসাইড এজ হয়ে বল জমা পড়ে স্লিপে থাকা বাবর আজমের হাতে। ৭ বল খেললেও তিনি রান করতে পারেননি কোনও।
তার পর বাড়তি বাউন্সের কারণে ক্যাচ আউট হতে হয়েছে সাদমানকে। কাট করতে গিয়ে এই ওপেনার ফিরেছেন ৩ রানে। তার পরের আউটটি ছিল দুর্ভাগ্যজনক। দ্রুত রান নেওয়ার তাড়ায় রানআউট হয়েছেন অধিনায়ক মুমিনুল হক (১)।
দ্রুত তিন উইকেট পড়ে যাওয়ার পর মুশফিকের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছিল। কিন্তু চট্টগ্রাম টেস্টের নৈপুণ্যে এই টেস্টে দেখাতে পারলেন না। সাজিদের বলে ক্যাচ তুলে দেন শর্ট মিড উইকেটে।
এর পর নাজমুল শান্তর বিদায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। অনফিল্ড আম্পায়ার তাকে ক্যাচ আউটের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু রিভিউ নেওয়ার পর দেখা গেছে নুমান নো বল করেছিলেন। তবে ১৯তম ওভারে সাজিদের ঘূর্ণিতে আর শেষ রক্ষা হয়নি। শান্তকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন এই অফস্পিনার। আম্পায়ার আউট দিলে শান্ত রিভিউ নিয়েছিলেন, তার পরেও বাঁচতে পারেননি। ৫০ বলে শান্ত ফেরেন ৩০ রান করে।
বিপর্যয়ের মুখে পড়া বাংলাদেশের বিপদে আরও বাড়ে মেহেদী মিরাজ বোল্ড হলে। সাজিদের অফস্পিন খেলতেই পারেননি তিনি। তার বিদায়ে পতন হয় সপ্তম উইকেটের।
এর আগে ৪ উইকেটে ৩০০ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে পাকিস্তান।
ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি তুলে ফাওয়াদ আলম অপরাজিত থাকেন ৫০ রানে। খেলেছেন ৯০ বল, মেরেছেন ৭টি চার। রিজওয়ানও ৯৪ বল খেলে ৫৩ রানে অপরাজিত থেকেছেন।
বৃষ্টিতে প্রায় দুটি দিন নষ্ট হওয়ার পর শুরু হয়েছে এই টেস্ট। টস জিতে ব্যাট করা পাকিস্তান খেলা শুরু করে ২ উইকেটে ১৮৮ রান নিয়ে। শুরুতে তাদের ওপর আধিপত্য দেখান স্বাগতিক পেসাররা। প্রতিরোধ গড়া আজহার-বাবরকে সাজঘরে পাঠিয়েছেন এবাদত-খালেদ। তবে প্রথম সেশন শেষের আগে সেই ধাক্কা সামলে উঠেন রিজওয়ান-ফাওয়াদ।
মাঠে খেলা গড়ালে দ্বিতীয় ওভারে উইকেট হারিয়েছে পাকিস্তান। মিরপুরে ৭০ রানে ২ উইকেট পড়ার পর বাবর-আজহার জুটিই প্রতিরোধ গড়ে দাঁড়িয়েছিল। ১২৩ রানের এই জুটি ভাঙে এবাদত হোসেনের কল্যাণে। তার শর্ট বল পুল করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন আজহার। বল টপ এজ হয়ে জমা পড়ে লিটন দাসের গ্লাভসে। আজহার ১৪৪ বলে ৫৬ রান করে ফিরেছেন।
অপরপ্রান্তে সেঞ্চুরির আশায় থাকা পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমও টেকেননি বেশিক্ষণ। তাকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে বিদায় দিয়েছেন পেসার খালেদ আহমেদ। তার হঠাৎ নিচু হয়ে পড়া বল আঘাত করে বাবরের প্যডে। তিনি রিভিউ নিয়েছিলেন, কিন্তু সেখানেও অনফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বহাল থেকেছে। ১২৬ বলে ৭৬ রান করে ফেরেন বাবর। তাতে ছিল ৯টি চার ও একটি ছয়। এটি খালেদের প্রথম টেস্ট উইকেট।
এর পর জুটি গড়ে দ্রুত গতিতে ব্যাট চালিয়ে খেলেছেন ফাওয়াদ-রিজওয়ান। অবশ্য এই জুটি এতদূর যেত না যদি ফাওয়াদ আলমকে ফেরানো যেত। এবাদতের ৭৩তম ওভারের শেষ বলে ফাওয়াদকে আউটের সুবর্ণ সুযোগ ছিল। আলট্রা এজে দেখা গেছে বল তার ব্যাট ছুঁয়েই লিটনের গ্লাভসে জমা পড়েছিল। কিন্তু স্বাগতিক শিবিরের কেউ আবেদনই করেনি তখন!
এর আগে এবাদতের বলে রিভিউ নিয়ে বাঁচেন রিজওয়ান। ৭৯তম ওভারেও আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে এলবিডাব্লিউ হয়েছিলেন এই ব্যাটার। কিন্তু সংশয় থাকায় তিনি রিভিউ নিয়েছিলেন। তাতে দেখা গেছে বল মিস করছে অফ স্টাম্প। পরে এই সুযোগগুলোই কাজে লাগান দুজন।
বিশেষ করে লাঞ্চ বিরতির পর হাত খুলে মারার চেষ্টা করেন তারা। তাতে রিজওয়ানকে আউট করার স্পষ্টও এসেছিল। মেরে খেলতে গিয়ে স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু বল হাতে জমাতে ব্যর্থ হয়েছেন তাইজুল।
শুরুতে বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময় সকাল সাড়ে ৯টায় খেলা শুরু করা যায়নি। বৃষ্টি থামার পর মাঠ খেলার উপযোগী করতে খানিকটা সময় লেগেছে। মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে শুরু হয়েছে চতুর্থ দিনের খেলা।
মন্তব্য করুন