নবীগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী মানুষ আতঙ্কে, ভেঙ্গে যেতে পারে উভয় তীরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা


দ্যা সিলেট পোস্ট প্রকাশের সময় : অক্টোবর ৭, ২০২৫, ১১:৩৯ অপরাহ্ন /
নবীগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী মানুষ আতঙ্কে,  ভেঙ্গে যেতে পারে উভয় তীরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা

নুরুজ্জামান ফারুকী হবিগঞ্জ থেকে ॥

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ কুশিয়ারা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন কোনভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। সরকারি নির্দিষ্ট নীতিমালা থাকলেও সেগুলো অমান্য করে যথেচ্ছভাবে বালু তুলছে প্রভাবশালী একটি মহল। মহাল ইজারা নেয়ার নির্দিষ্ট মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও সরকারি নির্দিষ্ট সীমারেখার বাইরে গিয়ে বালু উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। এতে একদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং অন্যদিকে নদীর তীরবর্তী জনপদ। অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে প্রতি বছর নদীগর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার একর জমি, বিলীন হচ্ছে বসতভিটা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বিভিন্ন অংশ। হুমকীর মুখে কুশিয়ারা নদীর ডাইক প্রকল্প, বিবিয়ানা গ্যাস কুপ ও বিবিয়ানা বিদ্যুৎ পাওয়া প্ল্যান্ট।

গতকাল সোমবার (৬ অক্টোবর) পাহাড়পুর এলাকা বিপুল পরিমাণ ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে দেদারছে বালু উত্তোলন করতে দেখা গেছে। একই জায়গা থেকে লক্ষ লক্ষ ফুট বালু অবৈধভাবে উত্তোলন করায় নদীর তলদেশ গভীর হয়ে পড়েছে। এতে ঝুকিঁর মধ্যে রয়েছে উভয় তীরের বাসিন্দারা। কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আতংকিত উভয় পাড়ের মানুষ। ভেঙ্গে যেতে পাড়ে গুরুত্বপুর্ণ স্থাপনা ও প্রতিষ্টান, এমন আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

নিয়ম নীতি ও আইনের তোয়াক্কা না করে এক বছরের বেশি সময় ধরে অবৈধভাবে কয়েক কোটি ঘনফুট বালু উত্তোলন করে আসছে। প্রশাসনের উদাসীনতা নাকি দেখেও না দেখার ভান করছে, জনমনে এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে বেশিরভাগ এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালী দুলাল মেম্বার, নুরুল আমীন, সজ্জাদুর রহমান, জিয়াউর রহমান, আনহার মিয়া, সাজু আহমদ, রুহেল মেম্বার, জিতু মিয়া, ওসমানীনগর থানার মাসুম আহমদসহ একটি মহলের যোগসাজশে এসব বালু উত্তোলন করে আসছেন ওয়াহিদ এন্টারপ্রাইজ ও আশরাফ এন্টারপ্রাইজ। তাদের সাথে যোগসাজস রয়েছে নবীগঞ্জের প্রভাবশালী বিএনপি নেতারা। যে কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। ইতিমধ্যে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় ফলাও করে এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশ হলেও তার তোয়াক্কা করছেন না কেউই।

স্থানীয়রা জানান, একটি প্রতিষ্টান প্রশাসনের প্রাথমিক অনুমোদন পেয়েছে বলে এলাকায় প্রচার করলেও তার মেয়াদ ও বালু উত্তোলনের পরিমাণের নির্দিষ্ট সীমা পাড় হয়ে গেছে অনেক আগেই। তারপরও মেয়াদ উত্তীর্ণ কাগজের দোহাই দিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে। প্রশাসনও রয়েছে নীরব। কিন্তু অনুমোদিত কাগজ পত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। কত ঘনফুট বালু উত্তোলন করা হবে, তার মেয়াদ কত দিনের তা কেউই বলতে পারেন না। শুধু বলা হয় অনুমোদিত কাগজ আছে। যার কোন ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। গত কয়েক দিন ধরে বৃষ্টিপাত হওয়ায় কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন। এলাকাবাসী এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে প্রধান উপদেষ্টাসহ পরিবেশ ও বন উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষন করছেন।