পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি
‘‘রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) সেবা’’ পদক পাচ্ছেন পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা রাসেল। আত্বীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবদের কাছে তিনি রাসেল নামে পরিচিত। গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদ্ঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য এবার তাঁকে ‘‘রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) সেবা’’ পদক দেওয়া হচ্ছে। কর্মজীবনে তিনি ২০১৫ সালে পিপিএম (সাহসিকতা) পদক লাভ করেন। এছাড়া ২০১৮,২০২০ এবং ২০২৩ সালে আইজিপিস ব্যাজ অর্জন করেন।
এবার পুলিশ বাহিনীর ৪০০ জনকে পদক দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে এদের নাম প্রকাশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন নিরাপত্তা বিভাগ। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) প্রজ্ঞাপন আকারে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়।
প্রকাশিত তালিকা অনুসারে সাহসিকতা, বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) পেয়েছেন ৩৫ জন, রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম) ৬০ জন। আর গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, সততা, কর্মনিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ (বিপিএম) সেবা পদক ৯৫ জন এবং ২১০ জনকে রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম) সেবা পদক দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ সপ্তাহের প্রথম দিনই পদকপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের পদক পরিয়ে দেওয়া হবে। এই পদক পুলিশের চাকরিতে খুবই সম্মানজনক। পুলিশ কর্মকর্তারা এ জন্য আর্থিক সুবিধা পান এবং নামের শেষে এই পদক উপাধি হিসেবে ব্যবহার করেন।
এবারের পুলিশ সপ্তাহ শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি)। পুলিশ সপ্তাহের প্রথম দিনের কর্মসূচিতে প্যারেডে সালাম গ্রহণের পর নিজ হাতে কর্মকর্তাদের পদকে ভূষিত করে থাকেন প্রধানমন্ত্রী।
পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা ২৭তম বিসিএসের একজন কর্মকর্তা। এর আগে তিনি হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার জেলায় এএসপি (সার্কেল) এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে ডেপুটি সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস হিসেবে হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। তিনি পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট পুলিশ সুপার হিসেবে পঞ্চগড়ে যোগ দেন। পুলিশ সুপার হিসেবে যোগ দিয়েই শক্ত হাতে তিনি পঞ্চগড় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাঁর নেতৃত্বেই চুরি,ডাকাতি, ছিনতাইসহ হত্যা মামলার রহস্য দ্রুত উদঘাটিত হয়। বেশ কিছু ক্লুলেস হত্যা মামলার উদঘাটন ও আসামীদের দ্রুতই গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়। এছাড়া মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের প্রেপ্তার ও মাদক উদ্ধারে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করছেন। অনেকগুলো চুরি মামলায় আসামীদের গ্রেপ্তার ও চোরাই পণ্য উদ্ধার করেন। এছাড়া জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন।
তাঁর পিতা ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নূরুল হুদা ও মাতা মিসেস হোসনে আরা হুদা।
তিনি জন্মস্থান গ্রামের বাবুরচর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৯৬ সালে এসএসসি। ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৯৮ সালে এইচএসসি পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৯-২০০০ সেশনে ভর্তি হয়ে এলএলবি (সম্মান) এলএলএম পাশ করেন। তিনি হাজী মুহম্মদ মহসিন হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন।
এদিকে, ‘‘পিপিএম সেবা’’ পদক পাওয়ায় পঞ্চগড় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ ও জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য শহীদুল ইসলাম শহীদসহ জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, একজন যোগ্য ব্যক্তিকেই যোগ্য সম্মান দেওয়া হয়েছে।
পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা এক প্রতিক্রিয়ায় জানান, এই পদক প্রাপ্তির কৃতিত্ব আমার একার না। এটা সমগ্র পুলিশ বাহিনী ও পঞ্চগড়বাসীর। পুলিশ সদস্যরা এবং পঞ্চগড়ের নানান শ্রেনি পেশার মানুষের সহযোগিতার ফলে এ পদক অর্জন করা সহজ হয়েছে।
মন্তব্য করুন