খাদেমুল ইসলাম পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদুর রহমান ডাবলুর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ উপার্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। গত ১লা ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন ঠাকুরগাঁও সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আজমীর শরীফ মারজী পঞ্চগড়ের বিজ্ঞ সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে ৭৯ লাখ ৭২ হাজার পাঁচ শত পঞ্চান্ন টাকা (৭৯,৭২,৫৫৫) মুল্যের জ্ঞাত বহির্ভূত সম্পদ উপার্জন ও সম্পদ বিবরণীতে ১৩ লক্ষ ৩৬ হাজার ৫২ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগে এই মামলা দায়ের করেছে কমিশন।
দুদকের মামলার এজহারে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ২৯ শে অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশনে জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে ১৩ লক্ষ ৩৬ হাজার ৫২ টাকা মুল্যের সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ উপার্জন এবং সম্পদ বিবরণীতে সম্পদ গোপনের অভিযোগে ২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন আইনের ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে।
দুদকে জমা দেয়া সম্পদ বিবরণীতে উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুর রহমান এক কোটি দশ লাখ আট হাজার টাকা মূল্যের স্থাবর -অস্থাবর সম্পদের কথা উল্লেখ করেছিলেন। তেঁতলিয়া সাব রেজিস্ট্রার অফিসের তথ্য অনুযায়ী ২০১৫ সালের ৪ ঠা মার্চ সম্পাদিত ( ৫৯০/১৫) দলিলে একটি জমির উপর নির্মিত আবাসিক হোটেলের মূল্য ৪২ লক্ষ টাকা দেখিয়েছিলেন আসামি মাহমুদুর। কিন্তু নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের নথি অনুযায়ী এই জমিসহ হোটেলের মূল্য ৫৫ লাখ ৩৬ হাজার ৫২ টাকা। মামলার এজাহারে বলা হয় ; ১৩ লক্ষ ৩৬ হাজার ৫২ টাকা সম্পদের তথ্য গোপন করে তিনি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধানে উঠে আসে স্থাবর অস্থাবর সম্পদ, বিনিয়োগ, ঋন পরিশোধ ও পারিবারিক ব্যয় মিলে এক কোটি ৭১ লাখ ৪৪ হাজার ৩৫ টাকা মূল্যের সম্পদ রয়েছে মাহমুদুর রহমানের। এরমধ্য তার উপার্জিত ৯১ লাখ ৭১ হাজার চারশত আশি টাকা মূল্যের সম্পদের গ্রহনযোগ্য হলেও ; ৭৯ লাখ ৭২ হাজার পাঁচ শত পঞ্চান্ন টাকা মূল্যের সম্পদের বৈধ কোন সুত্র উল্লেখ করতে ব্যর্থ হয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুর রহমান। এজাহারে বলা হয়েছে, জ্ঞাত বহির্ভূত সম্পদ নিজের ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন তিনি।
মামলার বাদি দুদকের ঠাকুরগাঁও সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আজমির শরীফ মারজী জানান তদন্তে অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা ও অন্য কোন তথ্য পাওয়া গেলে সেটিও আইন আমলে নিয়ে আসা হবে।
এ ব্যাপারে কাজী মাহমুদুর রহমান ডাবলুর বক্তব্য নিতে একাধিকবার মুঠোফোনে ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি তা গ্রহণ (রিসিভ) করেন নি।
আদালতের পিপি আমিনুর রহমান মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বাদি আদালতে অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করলে মামলার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হবে।
মন্তব্য করুন