হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে খোয়াই নদীর চর কেটে অবাধে চলছে মাটি বিক্রি। ইজারার শর্ত ভঙ্গ করে নদীর বেড়িবাঁধ-সংলগ্ন চরের মাটি এক্সকাভেটর দিয়ে কেটে ড্রাম ট্রাক ও ট্রাক্টরে বিক্রি করছেন মাটিখেকোরা। শ্যালো মেশিন দিয়ে দিন-রাত চলছে বালু উত্তোলন। এতে নদীর গতিপথ পরিবর্তনের পাশাপাশি ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হতে পারে উপজেলার আলাপুর, চরহামুয়া, লেঞ্জাপাড়া, কলিমনগরসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রাম ও সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর।
সরজমিনে দেখা যায়, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার আলাপুর এলাকায় এক্সকাভেটর দিয়ে কাটা হচ্ছে বেড়িবাঁধ-সংলগ্ন চরের মাটি। ফলে বাঁধের কাছে তৈরি হয়েছে পুকুরের মতো বড় বড় গর্ত। এ ছাড়া লেঞ্জাপাড়া এলাকা থেকেও ট্রাক্টরে নেওয়া হচ্ছে মাটি। শ্যালো মেশিনে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। এসব মাটি-বালু পরিবহনে প্রায় দুই ডজন ট্রাক্টর ও ড্রাম ট্রাক কাজ করছে। ট্রাক-ট্রাক্টর অবাধে চলাচলে অপরিকল্পিতভাবে কাটা হয়েছে বাঁধের একাংশ।
জেলা প্রশাসক সূত্রে জানা যায়, চুনারুঘাট উপজেলার উলুকান্দি গ্রামের ফারুক মিয়া খোয়াই নদীর এই অংশটি সাধারণ বালু তোলার জন্য জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে ২ কোটি ৫৬ লাখ টাকায় এক বছরের জন্য ইজারা নিয়েছেন। ইজারার শর্ত অনুযায়ী বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ অনুসরণ করে বালু উত্তোলন করার নির্দেশনা রয়েছে।
লেঞ্জাপাড়া এলাকার বাসিন্দা আক্কাস মিয়া বলেন, এখানে বালুমহালের ইজারাদারের লোকেরাই এভাবে চর কেটে মাটি নিচ্ছে। ট্রাক্টর চলাচলের কারণে রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। বেড়িবাঁধটিও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। নদীর পানি বাড়লে বাঁধ ভাঙার আতঙ্কে থাকি। ওরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় হয়। প্রতিবাদে মামলা-হামলার হুমকি দেয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শামিমুর রহমান বলেন, বেড়িবাঁধটি মেরামতের জন্য হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের বরাবরে লিখিত আবেদন করেছি।
ইজারাদার ফারুক মিয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ বলেন, ‘বিষয়টা নিয়ে আমি অবগত ছিলাম না। আমাদের লোকজন দিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাহিদ ভূঞা বলেন, ‘আমি বিষয়টির খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর গিয়াস উদ্দিন বলেন, এ ব্যাপারে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ReplyForward |
মন্তব্য করুন