স্টাফ রিপোর্টার
হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলি, পুলিশ সুপার হিসেবে হবিগঞ্জে যোগদানের ০২ বছর পূর্তি উপলক্ষে জেলা সদরে অবস্থিত ইউনিটের সদস্যবৃন্দ তাঁকে ফুল দিয়ে ও কেক কেটে দিনটি উদযাপন করেন। জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানের সঞ্চালকের ভূমিকায় ছিলেন হবিগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মোঃ শামসুল হক।
পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলি দেশের ঐতিহ্যবাহী উচ্চ শিক্ষা বিদ্যাপীঠ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হতে পরিসংখ্যানে এমএসসি ডিগ্রী লাভ করে ২০০৫ সালে ২৪তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সহকারি পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। এরপর ২০১২ সালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ২০১৭ সালে পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। দীর্ঘ চাকুরীজীবনের প্রায় বেশিরভাগ সময় তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সমূহ দক্ষতার সাথে পালন করেন।
দুই বছর কর্মকালে হবিগঞ্জবাসীর মন জয় করেছেন তিনি। করোনাকালে ও ভয়াবহ বন্যায় অসহায় মানুষের কাছে তিনি হয়ে উঠেছেন আস্থার প্রতীক। কর্মক্ষেত্রে এই দুই বছরে তিনি জয় করে নিয়েছেন মানুষের মন। ১২ জুলাই ২০২১খ্রি. তারিখ হবিগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব নেন।
সেবা, সততা, নিষ্ঠা আর আন্তরিকতা দিয়ে যিনি ইতোমধ্যে হবিগঞ্জবাসীর আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন। বলা চলে এই দুই বছরে তিনি পুলিশ সম্পর্কে হবিগঞ্জবাসীর ধারণাই পাল্টে দিয়েছেন। নিরলস পরিশ্রমী মেধাবী এই কর্মকর্তার কারণে হবিগঞ্জের সাধারণ মানুষ আজ পুলিশকে তাদের রক্ষাকবচ ও বন্ধু ভাবতে শুরু করেছে।
কর্মক্ষেত্রে এই দুই বছরে তিনি জেলার সার্বিক আইনশৃংখলা রক্ষাসহ সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিধান এবং জেলা পুলিশের উন্নয়নে নিরলস ভাবে পরিশ্রম করেছেন।
তিনি হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সদস্যদের তাদের কমিটমেন্টের জায়গাটি বোঝাতে পেরেছেন আর সাধারণ মানুষকে বার্তা দিতে পেরেছেন যে, পুলিশ কোন আতঙ্ক নয়, জনসাধারণের রক্ষাকবচ হিসেবে পুলিশ তাদের সাথে রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
যেকোন প্রয়োজনে তারা যেন পুলিশের সাহায্য নেয়। দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালন এই নীতির কারণে তিনি জেলার মানুষের কাছে এখন আস্থার প্রতীক।
হবিগঞ্জ জেলায় যোগদানের পূর্বে তিনি মেহেরপুর জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
করোনা মোকাবেলা, বন্যাসহ যেকোন দুর্যোগ মোকাবেলায় অসহায়দের সহযোগিতায় জেলায় সর্বদা নিরলসভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তিনি। জেলার ০৯টি থানার গ্রাম মহল্লা, পাড়ায় জেলা পুলিশের সকল ইউনিট নিরলসভাবে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন।
পুলিশ সুপার তাঁর বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম মহোদয়ের নেতৃত্বে জেলার প্রত্যেকটি থানায় বিট পুলিশিং কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। সকল থানার ইউনিয়ন পর্যায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই/এএসআইদের মোবাইল নম্বর ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়েছে। যাতে মানুষ দ্রুত তাদের সমস্যার কথা পুলিশকে জানাতে পারে। যেকোন প্রয়োজনে ৯৯৯ এ ফোন করার আহবান জানান তিনি।
অত্র জেলার যোগদানের পর হতে আইনশৃংখলা রক্ষাসহ প্রতিটি চাঞ্চল্যকর ঘটনার সুষ্টু তদন্তপূর্বক দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, অত্র জেলায় যোগদানের পর হতে সিলেট রেঞ্জের মান্যবর ডিআইজি জনাব শাহ মিজান শাফিউর রহমান, বিপিএম (বার), পিপিএম মহোদয়ের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা মোতাবেক জেলা পুলিশের সর্বস্তরের অফিসার ও ফোর্সকে সাথে নিয়ে কাজ করে আসছি। জেলা পুলিশের প্রতিটি সফলতার পেছনের মূল শক্তি হলো অত্র জেলার সকল অফিসার ও ফোর্স। যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই বিগত দুই বছর সফলতার সাথে অতিক্রম করা সম্ভব হয়েছে। এ সময় তিনি হবিগঞ্জ জেলাবাসী তথা জেলার বিভিন্ন পেশার কর্মজীবি ও প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ব্যক্তিদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আপনারদের সহযোগীতা ছাড়া জেলা পুলিশের আজ এতদূর এগিয়ে আসা সম্ভব হতো না। এ জন্য তিনি ভবিষ্যতেও হবিগঞ্জবাসীসহ সকলকে জেলা পুলিশকে সহযোগিতার আহবান জানান।
পুলিশ সুপার মহোদয় আরও বলেন, সামনের দিনগুলোতে মাননীয় আইজিপি মহোদয়ের নির্দেশনা মোতাবেক সিলেট রেঞ্জের মান্যবর ডিআইজি মহোদয়ের নেতৃত্বে জেলা পুলিশ হবিগঞ্জ দুর্নীতিমুক্ত, জনবান্ধব এবং বিট পুলিশিং এর ব্যাপক প্রসারসহ মাদকমুক্ত হবিগঞ্জ গড়ার পাশাপাশি জেলা পুলিশের সদস্যদের সার্বিক কল্যাণের বিষয়ে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে চাই।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) এর সভানেত্রী ও পুলিশ সুপার, হবিগঞ্জ সহধমির্ণী মিসেস তাহেরা রহমান সহ পুনাকের অন্যান্য নেত্রীবৃন্দ, জনাব মোঃ শামসুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস), হবিগঞ্জ, জনাব মোঃ খলিলুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল), হবিগঞ্জ, জনাব তোয়াহা ইয়াছিন হোসেন, সহকারী পুলিশ সুপার (শিক্ষানবিশ), হবিগঞ্জ, জনাব রফিকুল ইসলাম, ডিআইও-১, জেলা বিশেষ শাখা,হবিগঞ্জসহ জেলার বিভিন্ন পদবীর কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ।
মন্তব্য করুন