নজরুল ইসলাম
দশম বারের মতো এনআরবি সিআইপি সম্মাননা পেয়েছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী মৌলভীবাজার জেলার কৃতি সন্তান বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, এম আর গ্রুপের চেয়ারম্যান শিল্পপতি আলহাজ এম এ রহিম।
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা গুরুত্বপূর্ণ প্রবাসী বাংলাদেশীদের কে সিআইপি (বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) নির্বাচিত করে তালিকা ঘোষণা করেছে সরকার। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয় ৫৭ জন প্রবাসীকে রেমিট্যান্স ক্যাটাগরিতে, দশজন প্রবাসীকে আমদানি -রপ্তানি ক্যাটাগরিতে সিআইপি মর্যাদা দেয়া হয়েছে।
রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখার জন্য পরপর দশবার সিআইপি হবার গৌরব অর্জন করলেন যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতা এম এ রহিম। উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ এম এ রহিম এরআগেও নয় বার সিআইপি নির্বাচিত হয়েছেন।
সমাজ সেবা ও কমিউনিটি কাজে সিআইপি রহিমের রয়েছে বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রথম কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন। এক এগারোর উত্তাল সময়ে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতা এম এ রহিম সেসময়ে দেশে কারাবন্দী বঙ্গবন্ধু কণ্যা শেখ হাসিনার মুক্তির আন্দোলন সংগঠিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। শেখ হাসিনার যুক্তরাজ্যে অবস্থানকালীন সময়ে দেশে ফেরার প্রতিবন্ধকতা দুর করতে বিশ্বব্যাপী জনমত গঠনে জোরদার ভূমিকা রাখেন।
একান্ত আলাপচারিতায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে এম এ রহিম সিআইপি দ্য সিলেট পোস্ট ডট কম নিউস পোর্টালকে বলেন , ‘ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার যোগ্য দক্ষ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ অর্থনৈতিক সম্মৃদ্ধির রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশের অর্থনৈতিক সম্মৃদ্ধিতে প্রবাসীদের ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। এবারও আমাকে সিআইপি মর্যাদা দিয়েছেন ; আমি কৃতজ্ঞ। দেশের ধারাবাহিক উন্নয়নে অতীতের মতো ভূমিকা রেখে যাবো।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ২০১৯ সালের জন্য তিনটি আলাদা ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত এনআরবি-সিআইপিদের ক্রেষ্ট ও সনদ দিয়ে সম্মাননা দিয়েছিলেন । জানা যায় ২০১৯ সালে বাংলাদেশে বৈধ চ্যানেলে সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণকারী অনাবাসী বাংলাদেশি ক্যাটাগরিতে ৪৭ জন, বিদেশে বাংলাদেশি পণ্যের আমদানিকারক অনাবাসী বাংলাদেশি ক্যাটাগরিতে ৯ জন এবং বাংলাদেশে শিল্পক্ষেত্রে সরাসরি বিনিয়োগকারী ক্যাটাগরিতে ১ জন প্রবাসী বাংলাদেশি ছিলেন। তিন ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত সিআইপিদের মধ্যে ৩৭ জন ছিলেন মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী। এর মধ্যে ২৬ জনই সংযুক্ত আরব আমিরাতে। তাঁদের মধ্যে দুইজন নারী। এর পরই ছিল ওমান প্রবাসীদের অবস্থান। দেশটি থেকে সিআইপি হন নয়জন। বাকিদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের তিনজন, যুক্তরাজ্য, জাপান, ইতালি, রাশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের দুইজন করে এবং কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, মালদ্বীপ ও কম্বোডিয়ার একজন করে প্রবাসী বাংলাদেশি ছিলেন । এরপর ২০২১ সালে ৫৭ জনকে সিআইপি মর্যাদা দেন সরকার।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী নির্বাচিত সিআইপিরা ২ বছর পর্যন্ত (প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ থেকে) বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন। সিআইপি কার্ডের মেয়াদকালীন বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য প্রবেশপত্র পাবেন ও সরকার নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট বিষয়ক নীতি-নির্ধারণী কমিটিতে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবেন। দেশ ও বিদেশে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অগ্রাধিকার পাবেন। বিজয় দিবস, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, একুশে ফেব্রুয়ারি, শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ইত্যাদি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবস উপলক্ষে বিদেশের বাংলাদেশ মিশনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হবেন সিআইপিরা। সিআইপি কার্ডধারীরা ব্যবসা সংক্রান্ত ভ্রমণে বিমান, রেল, সড়ক ও জলযানে আসন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ ‘চামেলী’ ব্যবহার এবং স্পেশাল হ্যান্ডলিংয়ের সুবিধা পাবেন। সিআইপি ব্যক্তিদের স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও নিজের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে কেবিন সুবিধার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। বাংলাদেশে উপস্থিত থাকলে বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানে এবং সিটি করপোরেশনের আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ পাবেন সিআইপিরা।
এছাড়া, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মতো সুযোগ-সুবিধা পাবেন এবং তাদের বিনিয়োগ ‘ফরেন প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট (প্রমোশন অ্যান্ড প্রটেকশন) আইন-১৯৮০’ এর বিধান অনুযায়ী সংরক্ষণ করা হবে।
মন্তব্য করুন