ডেস্ক রিপোর্ট। দি সিলেট পোস্ট ।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের আটলান্টিক সিটিতে অনুষ্ঠিত হলো জমজমাট বাংলাদেশ মেলা। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব আটলান্টিক কাউন্টির উদ্যোগে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) সেন্ট ক্যাসেল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত উক্ত বাংলাদেশ মেলায় প্রধান অতিথি ছিলেন নিউইয়র্কের আবদুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মিয়া।
প্রায় ৫-৬ হাজার বাংলাদেশির এই মহামিলনে আটলান্টিক মহাসাগরের তীরবর্তী আটলান্টিক সিটির সেন্ট ক্যাসেল স্টেডিয়াম পরিণত হয়েছিল এক খণ্ড বাংলাদেশে। পূরো মাঠের চারিদিকে বাংলাদেশি পন্যের সমাহার এবং দেশীয় স্বাদের আহারে ব্যস্ত ছিলেন শত শত বাংলাদেশি।
করোনার কারনে বাংলাদেশ থেকে নামি-দামি শিল্পীরা আসতে না পারলেও বাংলাদেশের কিংবদন্তি শিল্পী তপন চৌধুরীর সংগীত পরিবেশনা ছিল দর্শকের কাছে খুবই আনন্দায়ক। মেলার অধিকাংশ সময় প্রবাসী সংগীত শিল্পীদের গান প্রবাসীরা প্রাণভরে উপভোগ করেন। প্রবাসী শিল্পীদের মধ্যে সংগীত পরিবেশন করেন আটলান্টিক সিটির জনপ্রিয় এবং এনটিভির ক্লোজআপ ওয়ান খ্যাত শিল্পী নিলাদ্রী চৌধুরী, জয়ন্ত সিনহা, জলি দাস এবং ইসরাত শর্মীর গান।
স্থানীয় শিল্পীদের গানের তালে তালে পুরো স্টেডিয়ামস্থল ছিল মুখরিত। গানের ফাঁকে ফাঁকে মূল ধারার রাজনীতিবিদদেরকে হাজারো বাংলাদেশির সাথে পরিচয় করিয়ে দেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব আটলান্টিক কাউন্টির সভাপতি শহীদ খান এবং সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমেদ। জনপ্রিয় উপস্থাপক বুলবুলের প্রানবন্ত উপস্থাপনায় মেলার পরিবেশ হয়ে উঠে অতিথীদের কাছে খুবই আনন্দদায়ক ও প্রানবন্ত। সাংস্কৃতিক কমিটির সদস্যা নিবেদিতা ভট্টাচার্যের কোরিওগ্রাফিতে ছোট ছোট মেয়েদের দেশীয় গানের সাথে নৃত্য পরিবেশনা ছিল দেখার মতো।
শত ব্যস্ততার মাঝেও সামাজিক উন্নয়ন এবং লিডার শিপসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশী কমিউনিটিতে অবদান রাখার জন্য মেলায় বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গকে সন্মাননা প্রদানে সামান্যটুকু কৃপণতা দেখাননি মেলার আয়োজকরা। লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয় বিপ্লব দাস, আহসান হাবিব জয়ন্ত সিনহা, শেখ সেলিম, ফরহাদ সিদ্দিক, হাবিব চৌধুরী, মনির হোসেন, মিল্টন চৌধুরী, মোহাম্মদ সোহেল আহমেদ এবং সামাজিক উন্নয়ন অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয় হাজি আবদুল কাদির মিয়া এবং রানা কবিরকে।
অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের সিনেটর ভিনস প্যালিস্টিনা, নিউজার্সির কংগ্রেসম্যান জেফ ভেন ড্রর প্রতিনিধি মোহাম্মদ উমর, এসেম্বলিম্যান ডন গার্ডিয়ান, আটলান্টিক কাউন্টির ডেমোক্রটিক পার্টির চেয়ারম্যান মাইক সোলায়মান, আটলান্টিক সিটির মেয়র মার্টি স্মল, প্লেজেন্টভিল সিটি মেয়র জুডি এম ওয়ার, নর্থফিল্ড সিটির মেয়র আরল্যান্ড চোও, এগ হারবার সিটির মেয়র লিসা, এবসিকন সিটির মেয়র কিম্বারলী হরটন, আটলান্টিক সিটির কাউন্সিলম্যান আনজুম জিয়া, আটলান্টিক সিটির কাউন্সিলম্যান জর্জ টিবিটসহ ডেমোক্রেট এবং রিপাবলকান পার্টির যুক্তরাষ্ট্রের মেইন স্ট্রিমের নেতারা।
দেশে এবং প্রবাসে সামজিক উন্নয়ন খাতে অভূতপূর্ব অবদান রাখার জন্য কংগ্রেসম্যান জেফ ভ্যান ড্র এবং ডিসট্রিক ২ নিউজার্সি স্টেট সিনেটর ভিনস প্যালিস্টিনার পক্ষ থেকে কংগ্রসোনাল প্রোক্লেমেশান প্রদান করা হয় হাজি আব্দুল কাদের মিয়া, আকবর হোসাইন, শহীদ খান, কাঞ্চন বল, সৈয়দ মো. কাউছার, সোহেল আহমেদ, কৃষ্ণ গোপাল চৌধুরী, আলী হোসেন, সাঈদ আলম মুকুল, মিরাজ খান, মোহাম্মদ সেলিম এবং মোহামদ ইসলাম টফিকে।
উদ্বোধনী বক্তব্যে আবদুল কাদের মিয়া বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি সংস্কৃতির বিকাশের জন্য বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে বাংলাদেশ মেলার মাধ্যমে যে প্রচেষ্টা চলছে তাকে আরও বেগবান করাই হচ্ছে আমার মূল লক্ষ্য। আমি গত এক যুগ ধরে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব আটলান্টিক কাউন্টির সাথে সম্পৃক্ত থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সির আটলান্টিক কাউন্টিতে আমার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
বাংলাদেশ মেলায় ছিল রকমারি স্টলসহ ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি পণ্যের সমাহার। মেলায় সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল র্যা ফেল ড্র। কারণ মেলার র্যাফেল ড্রয়ের প্রথম পুরস্কার ছিল দুই ভরি ওজনের গলার হার। অনুষ্ঠানের শেষাংশে বাংলাদেশের প্রযিতযশা গীতিকার কবির বকুলের উপস্থিতি এবং বক্তব্য প্রদান ছিল উপস্থিত সবার কাছে খুবই সম্মানজনক। সবশেষে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব আটলান্টিক কাউন্টির সব নেতাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান সভাপতি শহীদ খান এবং সোহেল আহমেদ।
মন্তব্য করুন