মঈনুদ্দীন শাহীন কক্সবাজার থেকে ;
কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত একমাত্র সরকারী শিশুতোষ বিদ্যাপিঠ উখিয়া মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেই ১৯২২ সালে প্রতিষ্টিত হয়ে আজব্ধি বিদ্যালয়টি সুনামের সাথে পরিচালিত হয়ে আসছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার প্রসার ঘটছে, ঘটছে শিক্ষার গুনগত মান। বিশেষ করে প্রধান শিক্ষক হিসেবে হারুনুর রশীদ দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে শিক্ষার পরিবেশ সহ বিদ্যালয়টির সার্বিক ব্যবস্থাপনায় আমুল পরিবর্তন ঘটেছে। কচিকাঁচা শিশুদের বিনোদনের সার্বিক ব্যবস্থাপনাসহ কোন ক্ষেত্রেই অপূর্ণ রাখেননি স্কুলটির পরিচালনায়। সকালে ছাত্র/ ছাত্রীদের স্কুলে প্রবেশের সময় এবং ছুটির পরে প্রধান শিক্ষক হারুন সাহেবকে নিজে স্কুলের মূল ফটকে দাঁড়িয়ে ছাত্র/ ছাত্রীদের রাস্তা পার করে দেয়া থেকে শুরু করে সকল প্রকার কার্য নিজ দায়িত্বে পালন করতে দেখা গেছে যা বর্তমান সময়ে আশা করা অনেকটা দুষ্কর বলা যায়।
এতো সুসংবাদের মাঝে ও একটি দুঃসংবাদ স্কুলটির পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতা তৈরী করেছে তা হলো ভবন সংকট। উখিয়া উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত একমাত্র স্কুল হওয়ায় এখানে ছাত্র/ ছাত্রীর সংখ্যা সংরক্ষিত আসনের তুলনায় অপ্রতুল। বিশেষ করে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ক্যাম্পে চাকুরীজীবিরাও এই স্কুলটিকেই বেচে নিয়েছে তাদের সন্তানদের পড়াশোনার মূল প্রাণকেন্দ্র হিসেবে। যে কারনে ৫ শ ছাত্র/ ছাত্রীর ধারণ ক্ষমতার স্কুলটিতে বর্তমানে প্রায় ৯৩১ জন ছাত্র/ ছাত্রীর আসন বিন্যাসে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে স্কুল কতৃপক্ষ।
উপরোক্ত বিষয়ে উখিয়া মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুন আর রশীদ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৫ শ ছাত্র/ ছাত্রীর ধারণ ক্ষমতার স্কুলটিতে বর্তমানে ৯৩১ জন ছাত্র/ ছাত্রী পড়াশোনা করছে। একটি শ্রেনীকক্ষে যেখানে ২০/২৫ জন ছাত্র/ ছাত্রী বসার কথা সেখানে এখন গাদাগাদি করে ৪০/ ৫০;জন ছাত্র/ ছাত্রীকে বসিয়ে পাঠদান করাতে হচ্ছে। বিষয়টি বর্তমান করোনাকালীন সময়ের জন্য হুমকি স্বরুপ বলেও জানান তিনি। অন্যদিকে ছোট ছোট শিশুদের সাথে আসা তাদের অভিবাবকদের বসার জন্য ও একটি নির্দিষ্ট স্থান দরকার, কিন্তু যেখানে স্কুলে পড়তে আসা ছাত্র/ ছাত্রীদের আসন সংকটে ভুগছে স্কুলটি সেখানে অভিবাবকদের অপেক্ষার যায়গা করে দেয়া আকাশ কুসুম কল্পনা ছাড়া কিছুই নয়। তাছাড়া স্কুলটিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দ্বীগুন হওয়ায় ছাত্র/ ছাত্রীদের দুই ভাগে বিভক্ত করে পাঠদান করাতে হচ্ছে। প্রথম কার্যদিবস শুরু হয় সকাল ৯ টা থেকে শুরু করে বেলা ১১- ৩০ পর্যন্ত, দ্বিতীয় কার্যদিবস ১২ টা থেকে শুরু করে বিকাল ৪ টায় শেষ করতে হয়। এতে করে শিক্ষকদের উপর পড়ছে শারিরীক ও মানসিক চাপ, যা সুষ্ঠু স্বাভাবিক পাঠদানে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। এমতাবস্থায় বিদ্যালয়ের সার্বিক ব্যবস্থাপনা এবং স্বাভাবিক সুষ্টুভাবে পাঠদানের লক্ষ্যে বিদ্যালয়ের অতিরিক্ত ভবন নির্মানের বিকল্প নেই বলে জানান তিনি।
প্রধান শিক্ষক আরো বলেন, বিদ্যালয় এলাকায় যেহেতু নতুন ভবন নির্মানের স্থান নেই সেহেতু বর্তমান দ্বীতল বিশিষ্ট গবেষণা ভবনটি আর এক তলা বৃদ্ধি করলে শিক্ষার্থীদের আসন বিন্যাসে কিছুটা সুবিধা হবে এবং শিক্ষার্থীরা আসন সংকট থেকে মুক্তি পাবে। এতে করে শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে পাবে। বিষয়টি সু বিবেচনার জন্য তিনি সদ্যাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সুদৃষ্টি কামনা করেন।
মন্তব্য করুন