তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি :
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় বাবলু (৪৫) নামের এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে মডেল থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৬ মে) ভোরে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত বাবলু ওই এলাকার মৃত আরফান আলীর পুত্র। এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জমির (৩৫) নামের একজনকে থানা হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
পরিবারটির অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে বাবলুকে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। বিল্লু, বেলাল, দুলাল, আল আমিন, জামাল, জব্বার, কাজল, জমির আলীদের সাথে জমাজমি নিয়ে বিরোধ চলছে। জমি বেদখল মামলার আসামী বিল্লু গত সোমবার কোর্টে জামিন পাওয়ার পর পরই আদালতেই বাবলুকে এক সপ্তাহের মধ্যে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এক সপ্তাহ না যেতেই বাবলুকে মেরে ফেলা হলো।
নিহতের স্ত্রী হাসিনা বেগম জানান, ফজরের আযানের আগে আগে আমার স্বামীর চাচাতো ভাই জমির বাড়িতে এসে কিসের জরুরী কথা আছে বলে ডাক দিয়ে ঘরের বাইরে নিয়ে যায়। কদিন ধরেই বিল্লুদের হুমকিতে আমরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। আমিও ঘর থেকে বের হয়ে পিছু নেই। পরে স্বামী আমাকে ঘরে গিয়ে ঘুমাতে যেতে বলে কোথায় যেন চলে যায়। পরে আর ফিরে আসেনি। বাড়িতে না আসায় সকালে খুঁজতে থাকি। পরে চাবাগানের ধারে একটি কাঠাল গাছে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাই। আমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে মেরে ফেললো ওরা। স্বামী হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চান তিনি।
নিহতের চাচাতো বোন সাহেরা খাতুন জানান, সকালে আমার ভাই বউ হাসিনা বাবলুর খোঁজ করতে বাড়িতে আসে। বলি এখানে আসে নাই। পরে আমিও তার সাথে খুঁজতে নদীতে যাই। পরে দেখি কাঠাল গাছে লাশ ঝুলতাছে। আমার ভাইকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমার কোন জমি নাই, কিন্তু আমাকেও মামলার আসামী করছে বিল্লু, বেলালরা। এরকম অভিযোগ নিহতের মামাতো ভাই আবু তাহের চানু, চাচাতো বোন নাসিমা, আব্দুল লতিফসহ পরিবার ও আত্মীয় স্বজনের।
সত্তরোর্ধ্ব বয়সী নিহতের মা আসমা খাতুন জানান, আমার পোলাডারে মাইরা ফেলাইছে বিল্লুরা। দুই দিন আগে আমারেও মারছে। চুলের মুঠি ধরে কিল-ঘুষি মারছে। হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। ওখানেই শুনলাম, আমার পোলাডারে রাতে ডেকে নিয়ে যায়। সকালে তার লাশ পাইলাম।
মডেল থানার ওসি আবু ছায়েম মিয়া বলেন, সকালে ৯৯৯ কলের মাধ্যমে ঝুলন্ত লাশের বিষয়টি জানতে পারি। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করি। লাশের সূরতহাল নির্ণয় করে বিষয়টি সন্দেহ হওয়ায় ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর জানা যাবে আত্মহত্যা না হত্যা। এ ঘটনায় রাতে ডেকে নিয়ে যাওয়া জমির আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। মামলার এজাহার পেলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য করুন