কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেছেন, আওয়ামীলীগ তথা বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে দেশ উন্নয়নের মহাসড়ক থাকবে। কোনদিন পথ হারাবে না বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও বলিষ্ট ভূমিকার কারণেই দেশ আজ করোনা মোকাবেলায় এশিয়ার মধ্যে ৫ম এবং বিশে^র মধ্যে ২০তম স্থানে রয়েছে। তিনি গতকাল বিকেল ৩টায় কুলাউড়া উপজেলার লংলা চা বাগানে মুল্লুক চলো আন্দোলনের ১০১তম বর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন, লংলা ভ্যালী কার্যকরী পরিষদের আয়োজনে চা শ্রমিক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কথাগুলো বলেন। শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, আওয়ামীলীগ টানা তৃতীয়বার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় রয়েছে। এই সময়ে দেশের সকল শ্রেণীপেশার মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করেছে সরকার। চা শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে উন্নত নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে যে সকল সুযোগ-সুবিধার প্রয়োজন আওয়ামীলীগ সরকারের আমলেই তা নিশ্চিত হবে। তিনি আরো বলেন, চা শ্রমিকদের মজুরী ৩০ টাকা থেকে শুরু করে ১২০ টাকায় এসেছে, কিন্তু এই মজুরীটুকুও বর্তমান সময়ের জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। সরকার চা শ্রমিকদের জন্য বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা করেছে। যারা এর বাইরে রয়েছেন তাদেরকেও পর্যায়ক্রমে প্রণোদনার আওতায় আনা হবে। তিনি চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে যাওয়ার আহবান জানান।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন লংলা ভ্যালী কার্যকরী পরিষদের সভাপতি মো. শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও দপ্তর সম্পাদক নন্দলাল দাসের পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ একে এম সফি আহমদ সলমান, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাহী উপদেষ্টা ও কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বাবু রামভজন কৈরী, টিলাগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মালিক, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মালিক, বাংলাদেশ টি এস্টেট স্টাফ এসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু অঞ্জন গোস্বামী ও বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য লাছানা মাদ্রাজী পাশী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন লংলা ভ্যালী কার্যকরী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জু গোস্বামী। অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন, মাথিউরা চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি সুগ্রীম গৌঁড়, রাজানগর চা বাগান শ্রমিক নেতা পূরণ উরাং অরুন, তারাপাশা চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি প্রেমানন্দ রায়, মনিপুর চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মধুমৃধা, ইউপি সদস্য লছমী নারায়ন অলমিক, কালিটি চা বাগান শ্রমিক নেতা বিশ^জিৎ দাস ও দয়াল অলমিক, বুরহান নগর চা বাগান শ্রমিক নেতা রাসেল আহমেদ, মুরইছড়া চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি জয়কীর্ত্তন সাহা ও রাঙ্গিছড়া চা বাগান শ্রমিক নেতা আব্দুল মনাফ প্রমুখ। সমাবেশ থেকে সরকারের কাছে চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ প্রতিবছর রাষ্ট্রীয়ভাবে ২০ মে চা শ্রমিক দিবসের স্বীকৃতি দেওয়া, চা শ্রমিকদের বসত ভিটা স্থায়ীকরণ, চাকুরীসহ বিশ^বিদ্যালয় ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চা শ্রমিকদের কৌটা নির্ধারণ এবং বাংলাদেশ শ্রম আইন সংশোধনীর সময় একজন শ্রমিক প্রতিনিধি কমিটির অন্তর্ভূক্ত করার দাবী জানানো হয়। এসময় শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথি ক্রমান্বয়ে চা শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত দাবীগুলো প্রধানমন্ত্রী বরাবর উপস্থাপন এবং তা বাস্তবায়ন করতে শ্রমিক নেতৃবৃন্দকে আশ^স্থ করেন। এর আগে প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দকে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করেন আয়োজকরা।
মন্তব্য করুন