ডেস্ক রিপোর্ট। দি সিলেট পোস্ট।
দেশের বাজারে বহুল প্রচলিত নামিদামি পাঁচটি ব্র্যান্ডের টি-ব্যাগে পাওয়া গেছে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর প্লাস্টিক কণা (মাইক্রোপ্লাস্টিক)। টি-ব্যাগের চা পানের মাধ্যমে প্রতি বছর প্রায় ১০.৯ টন প্লাস্টিক কণা রাজধানী ঢাকায় বসবাসকারী মানুষের দেহে প্রবেশ করতে পারে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, একটি চা-পাতা ভর্তি টি-ব্যাগে ৫০৫টি এবং খালি টি-ব্যাগে ৪৭৭টি প্লাস্টিকের কণার উপস্থিতি রয়েছে।
গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক ড. খবির উদ্দিন, একই বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. এহেদুল আকবর ও মো. আবু বক্কর সিদ্দিক এবং ব্রাজিলের ফেডারেল ইউনিভার্সিটি অব গোয়াসের গুইলহার্ম মেলাফিয়া।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘সায়েন্স অব দ্য টোটাল ইনভায়রনমেন্ট’-এ গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণায় ব্যবহৃত পাঁচটি ব্র্যান্ডের টি-ব্যাগে যেসব প্লাস্টিকের কণা পাওয়া গেছে সেগুলো মানদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর; এমনকি এসব গ্রহণের ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকিও রয়েছে।
এসব প্লাস্টিক কণা আকারে প্রায় ৩৩ থেকে দুই হাজার ১৮০ মাইক্রো মিটার। এ ছাড়া গবেষণায় প্রায় ৯ ধরনের রঙের প্লাস্টিক কণার উপস্থিতি পাওয়া গেছে, যার মধ্যে বাদামি, নীল ও লাল রঙের প্রাধান্য বেশি।
গবেষণা দলের প্রধান ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা ঢাকার সুপারমার্কেটগুলোতে পাওয়া যায় এমন পাঁচটি ব্র্যান্ডের টি-ব্যাগের ওপর গবেষণা করে ক্ষতিকর প্লাস্টিক কণার উপস্থিতি পেয়েছি। একটি খালি টি-ব্যাগের তুলনায় চা-পাতা ভর্তি টি-ব্যাগে মাইক্রোপ্লস্টিকের পরিমাণ বেশি। সংখ্যায় তা প্রায় ২২ দশমিক ২ শতাংশ। এ থেকে বোঝা যায়, চা প্রক্রিয়াজাতকরণের সময়ও প্লাস্টিক কণার সংমিশ্রণ হয়ে থাকে।
জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি বিবেচনায় সর্বক্ষেত্রে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো কিংবা শূন্যে নামিয়ে আনার পরামর্শ দেন গবেষক ড. মুস্তাফিজুর রহমান। না হলে অদূর ভবিষ্যতে প্লাস্টিকের কণার দূষণে বাংলাদেশের মানুষ ব্যাপক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়বে বলেও মনে করেন তিনি।
মন্তব্য করুন