নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহীর নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার অন্তর্গত ধুতরাবন এলাকা থেকে দুই মাদক কারবারী নারীর কাছে ৪৮৫ পিচ ইয়াবা পাওয়ার পরও তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ উঠেছে, কাশিয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম মাসুদ পারভেজ দুই লাখ টাকার বিনিময়ে ওই দুই মাদক কারবারী নারীদের ছেড়ে দেন।
রোববার (২৭ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে কাশিয়াডাঙ্গা থানায় এ ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, গতকাল (শনিবার) দিনগত রাত ৩ টার দিকে নগরীর ধুতরাবন এলাকায় থেকে মৃত মনতাজ আলীর স্ত্রী দোলা (৫৮) ও তার পুত্রবধু জিন্নাতুন আক্তার মলিকে (৩২) তাদের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেন। এসময় মলি ও তার শাশুড়ির তাদের বাড়ির ভেতর লুকানো ৪৭৫ পিচ ইয়াবা সহ গ্রেফতার করে আনেন কাশিয়াডাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক শাহিন ও কাশিয়াডাঙ্গা থানার বক্স পুলিশের উপ-পরিদর্শক মানিক। রাতভর ধৃত অভিযুক্তের পরিবারের সাথে চলে দরকষাকষি। পরে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে দোলা ও তার পুত্রবধুকে ২ লাখ টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে এ ঘটনায় দোলার ছেলে মশিদুলকে পলাতক দেখিয়ে তার নামে ৩৬৭ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার দেখিয়ে মাদকের মামলা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে স্থানীয়দের ভাষ্য, দোলা ও তার ছেলে মশিদুল এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তারা শুধু মাদক ব্যবসায়ীই নন, তারা একই সাথে পুলিশে ও বিভিন্ন আইন শৃংখলা বাহিনীর সোর্সের কাজ করে স্থানীয়দের বিভিন্ন সময় নানান হয়রানি করেন। কালেভদ্রে পুলিশ তাদের তাঁড়া করলে তারা ধুতরাবন এলাকা থেকে তাদের আরেকটি বাড়ি গুড়িপাড়ায় অবস্থান নেয়। তবে অধিকাংশ সময় ম্যানেজ করেই চলে তাদের মাদকের ব্যবসা।
মাদক সহ দুই নারীকে আটকের বিষয়টি জানতে চাইলে কাশিয়াডাঙ্গা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক শাহিন বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারবো না। আপনি কাশিয়াডাঙ্গার বক্স পুলিশের ইনচার্জ মানিকের সাথে ফোনে কথা বলেন।
বক্স পুলিশের ইনচার্জ মানিক প্রথমে বলেন, রাত ৩টার দিকে মশিদুল মাদক নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। তাঁকে ধরতে গিয়ে সে মাদক ফেলে বাড়ির দিকে দৌড়ে পালায়। পরে ওই মাদক সহ তার বাড়িতে গিয়ে তাঁকে খোঁজ করা হয়। পরে তাঁকে না পেয়ে তার মা দোলা ও মলিকে থানায় নিয়ে আসা হয়। কিন্তু প্রতিবেদকের কয়েকটি প্রশ্নের জবাবে তিনি পরক্ষণেই স্বীকার করেন দোলা ও মলির দেখানো জায়গা থেকেই মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। ওই সময় মশিদুল বাড়িতে ছিল না। তবে অর্থের বিনিময়ে তাদের ছাড়ার বিষয়টি না স্বীকার করলেও তিনি বলেন, মলির একটি ছোট্ট কোলের বাচ্চা আছে। আর তাই মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেই তাদের ছেড়েছেন ওসি।
জানতে চাইলে কাশিয়াডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ পারভেজ বলেন, এ ধরনের কথা একেবারেই ভিত্তিহীন। অভিযানের সময় এসআই মানিক ও এসআই শাহিনের সাথে একজন এসিও নেতৃত্বে ছিলেন। দোলা ও মলিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে দোলার ছেলেকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি মাসুদ পারভেজ।
মন্তব্য করুন