হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ॥
ফেসবুক ও টিকটকের মাধ্যমে প্রেম অতপর বিয়ে করে স্ত্রীকে ধর্ষণ ও ভারতে পাচারের ঘটনার মূল হোতা সোহেলকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে মৌলভিবাজার সদর থানা থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-৯ হবিগঞ্জ ক্যাম্প। এর আগে ওই নারী বাদী হয়ে ২১ মে লাল মনিরহাটের পাটগ্রাম থানায় সোহেলসহ ৫ জনকে আসামী করেন নির্যাতিতা ওই তরুনী। ২২ মে অপর ৩ আসামীকে গ্রেফতার করতে পুলিশ। এ ব্যাপারে মঙ্গলবার দুপুরে র্যাব র্যাব-৯ এর হবিগঞ্জ ক্যাম্প কমান্ডার লেফটেনেন্ট কমান্ডার নাহিদ হাসান তার কার্যালয়ে ব্রিফিং করে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য জানান।
ব্রিফিং-এ জানানো হয়, নবীগঞ্জ উপজেলার বেতাপুর গ্রামের কিবরিয়ার ছেলে সোহেল মিয়ার (২৫) সাথে ৩ বছর আগে পরিচয় হয় পাবনা জেলার সাথিয়া উপজেলার রুকশিপাড়া গ্রামের তরুণীর (২২)। ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয়ের সুবাদে তাদের মাঝে গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে প্রতারক প্রেমিক সোহেল গত বছরের মার্চ মাসে ভালোবাসার দূর্বলতার সুযোগে সাতক্ষীরা জেলার সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতের কলকাতায় নিয়ে যায় তরুনীকে। সেখানে তাঁকে আটকে রেখে ধর্ষণ ও দেহ ব্যবসা করতে বাধ্য করে প্রেমিক সোহেল। চলতি বছরে জানুয়ারী মাসে কৌশলে তাদের কবল থেকে দেশে আসেন নির্যাতিতা তরুণী। এরপর সোহেলও দেশে এসে ওই তরুণীকে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে সোহেল-প্রেমিকা বিয়ে করে। কিছুদিন পর তরুনী গর্ভবতী হন। আবারো তাকে গত ১২ মে পাটগ্রামের সহযোগীদের নিয়ে ভারতে পাচার করে। পরে তার সহযোগিদের নিয়ে ওই নারীকে গণধর্ষণ করে। এক সপ্তাহ পর কৌশলে গত ১৫ মে দহগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ফিরে আসে। দেশে ফেরার পর এবার পাচারকারী দলের সদস্য আশরাফুল ইসলাম সহ সহযোগিরা টাকার জন্য তাকে আটকে রেখে ধর্ষণ করে। সেখান থেকেও কৌশলে পালিয়ে পাটগ্রাম থানায় আশ্রয় গ্রহণ করে তরুণী। এ ঘটনায় গত ২১ মে ওই তরুনী সোহেলকে প্রধান আসামী করে ৫ জনের বিরুদ্ধে পাটগ্রাম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ও মানব পাচার প্রতিরোধ দমন আইনে মামলা করেন।
এদিকে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৯ হবিগঞ্জ ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল গতকাল ২৪ মে সকাল ১০ টার দিকে মৌলভীবাজার জেলা সদর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই মামলার ১নং আসামী নবীগঞ্জ উপজেলার বেতাপুর গ্রামের কিবরিয়া আহমদের পুত্র সোহেল মিয়া (২৭)কে গ্রেফতার করে। র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। আসামি সোহেল পাটগ্রাম থানায় হস্তান্তর করা হবে বলে জানায় র্যাব।
এদিকে এ ঘটনায় পাটগ্রাম থানা পুলিশ শনিবার দিনভর অভিযান চালিয়ে পাচারদলের সদস্য আশরাফুল ইসলাম, মোকছেদুল হক, চম্পা বেগম নামে তিনজনকে গ্রেফতার করে।
মন্তব্য করুন