পঞ্চগড় প্রতিনিধি
গোরস্থান থেকে উদ্ধার হওয়া ব্যক্তির নাম জাকির হোসেন, পেশায় একজন প্রাইভেট কোম্পানীর ম্যানেজার, পারিবারিক জীবনে ২ কন্যা সন্তানের পিতা তিনি। তিনি তেতুলিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জরুরী বিভাগে ভর্তি তার পিতা মৃত- মোদাচ্ছের আলী, কসাইরহাট, শরিয়তপুর বলে জানিয়েছে। এরআগে তার পকেটে থাকা হানিফ পরিবহনের একটি টিকিটে থাকা মোবাইল নাম্বারের সূত্রধরে স্থানীয় সাংবাদিক আব্দুল বাসেত ফোন করলে মারিয়া নামে একজন ভদ্র মহিলা, ঢাকা, লালবাগ ফোনটি রিসিভ করেন। তাকে অজ্ঞাত ব্যক্তির খবর জানালে তার স্বামী ইমাম হোসেন এর মোবাইল নাম্বার দেন। পরবর্তীতে উক্ত ফোনে কথা বলে অজ্ঞাত ব্যক্তির ছবি হোয়াট অ্যাপসে পাঠালে ছবি দেখে ছেলেটি তার ছোট ভাই বলে আমাকে জানান। তখন রাত অনুমান ১০ টা বাজে। তারা সেই মুহূর্তে নাবিল পরিবহনে ঢাকা থেকে পঞ্চগড় তেঁতুলিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। সকাল অনুমান ৯ টায় পঞ্চগড়ে নেমে তারা আমাকে ফোন করে তেঁতুলিয়া হাসপাতালে আসেন সোমবার এবং সকাল ১০ টায় ছোট ভাই জাকিরকে পেয়ে আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মাসুদ হাসান এর চিকিৎসা পরামর্শ শোনেন। পরবর্তীতে তাদেরকে তেঁতুলিয়া কাঞ্জনজঙ্ঘা আবাসিক হোটেলে কিছুটা সময় বিশ্রামের ব্যবস্থা করে দেই।
এসময় ইমাম হোসেন বলেন, আমরা পরিবার নিয়ে মিরপুরে থাকি। গত ৩০ সেপ্টেম্বর/২২ জাকির বাড়ির পাশে একটি মসজিদে জুম্বার নামাজ আদায় করে বাড়িতে গিয়ে দুপুরের খানা খান। ্এরপর মোবাইল, মানিবেগ রেখে একটি চিরকুট লিখে ‘‘ আমি স্বেচ্ছায় চলে যাচ্ছি, যতদূর মন চাই, তোমরা আমাকে খুঁজবা না, আমার চলে যাবার জন্য কেউ দায়ী নয়’’ । আমরা বিকালে উক্ত চিরকুট দেখে কারখানা এবং আত্মীস্বজনের বাড়িতে খোঁজ খবর নেই এবং থানায় জিডি করি। এছাড়া প্রিন্ট ও ইলেক্টনিক মিডিয়ায় হারানো সংবাদ প্রচারের জন্য যোগাযোগ করি। এরমাঝে আপনাদের এলাকায় তাকে পেয়ে সৃষ্টি কর্তার কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।
তবে জাকির কিভাবে এই এলাকায় এসেছে তা পরিবারের লোকজন বলতে পারছে না। কিন্তু জাকির মুখে কোন কথা না বললেও লিখে জানাই তাকে অপরিচিত লোক কিছু জোর করে খাইয়ে দিয়েছে এরপর আর কিছু বলতে পারছে না।
সন্ধ্যা ৬ টায় হানিফ পরিবহনে তারা জাকির হোসেন সহ ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। এসময় জাকির হোসেন এর বড় ভাই ইমাম হোসেন ও মোশারফ বলেন কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন ভাই আপনারা আমার ভাইয়ের জন্য যা করেছেন এই ঋণ কোনদিন শোধ করতে পারব না। তিনি তেঁতুলিয়ার মানুষের এমন মহানুভবতা দেখে তার আত্মীয় স্বজনদের বার বার ফোন করে স্থানীয় চেয়ারম্যান সাহেব সদর, ২নং ওয়ার্ড মেম্বার সাহেব, হাসপাতালের স্টাফ, স্টাফ নার্স ও ডাক্তারদের বিষয়ে প্রশংসা করেন।
উল্লেখ্য যে, গত ০২ অক্টোবর/২২ রবিবার বিকাল অনুমান ৫ টায় ভাদ্রুবাড়ি গোরস্থানে অজ্ঞান অবস্থায় তাকে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে জানালে তারা উদ্ধার করে তেঁতুলিয়া হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন। এব্যাপারে মডেল থানা ওসি আবু সাঈদ চৌধুরি যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষটি অবগত রয়েছেন।
মন্তব্য করুন