নূরুজ্জামান ফারুকী হবিগঞ্জ থেকে।
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর চা বাগান-সংলগ্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতুটি সময়ের সঙ্গে আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। এখানকার মানুষের চলাচলের অন্যতম সহায়ক এই সেতুটি চালানো হচ্ছে জোড়াতালি দিয়ে। বারবার আবেদন করেও এখানে একটি স্থায়ী সেতুর ব্যবস্থা না হওয়ায় হতাশ স্থানীয়রা।
এই সেতুটি ধরে স্থানীয় চা বাগানসহ আশপাশের প্রায় ৫ হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাচল করছে। চা বাগানের চা পাতা ও অন্যান্য পণ্য পরিবহনের একমাত্র পথ এই সেতুটি। প্রায়ই ঝুঁকি নিয়ে এ পথে মাল আনা নেওয়া করতে হয় বাগান কর্তৃপক্ষকে। এতে যে কোনো সময় সেতু ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, নির্বাচনের সময় নেতারা এসে বড় বড় কথা বলে গেলেও বাস্তবে এই সেতুর দাবি পূরণ করেনি কেউ। বর্তমান সরকারের আমলে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। অথচ স্থানীয়দের এই সমস্যা সমাধানে এখানকার জনপ্রতিনিধিদের কোনো গুরুত্বই নেই। নড়বড়ে কাঠের সেতুটি কিছুদিন পর পর শ্রমিকরা জোড়াতালি দিয়ে ব্যবহারের জন্য ঠিক করেন। এর জন্য একেকবার খরচ হয় প্রায় ২০-২৫ হাজার টাকা। স্থায়ী একটি পাকা সেতু না হওয়ায় চা বাগানের উৎপাদিত চা সরাসরি পরিবহন করা সম্ভব হচ্ছে না। জগদীশপুর ইউপি সদস্য ও চা বাগান শ্রমিক সন্তোষ মুন্ডা জানান, কাঠের এই সেতু দিয়ে যুগ যুগ ধরে চা বাগানের লোকজন চলাচল করছে। সেতুটি পাকা করার ব্যাপারে বিমানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন। কাঠের সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় চা বাগানের কোনো মালামাল পরিবহন করা সম্ভব হচ্ছে না।
বাগান সভাপতি নরেশ কৈরি জানান, সরকার দেশের অনেক উন্নয়ন করে যাচ্ছে। তবে এখানকার মানুষের ভাগ্য বদল হচ্ছে না। কাঠের সেতুটি যুগ যুগ ধরে পাকা করা হচ্ছে না। এ নিয়ে সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। বাগানের নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ বছর আগে তৈরি করা হয় এই সেতুটি। বৃষ্টিতে ভিজে কাঠ পচে আবার নষ্ট হয়ে যায়। জোড়াতালি দিয়ে সেতুটি এভাবে টিকে রয়েছে। সেতুটি পাকা করা হলে ৩টি গ্রাম জগদীশপুর, লেবামারা, রসুলপুরের লোকজন সহজেই চলাচল করতে পারত। চা বাগানের ব্যবস্থাপক ফকির লিমন আহমেদ জানান, সরকার মাধবপুরে অনেক সেতু, রাস্তা পাকা করে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করেছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটি পাকা করলে স্থানীয় চা শিল্পের বিকাশে তা ভূমিকা রাখত।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নূর মামুন জানান, সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি নির্মাণের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তবে এখনও টেন্ডারে যায়নি।
মন্তব্য করুন