মুহাম্মদ আবদুর রহীম চৌধুরী
“নেতা নয় নীতি, নেতাকে নয় নীতিকে ফোকাস”-এরকম সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি গঠন করে যথাসম্ভব নিজেকে ফোকাসে না এনে নীতি/আদর্শকে ফোকাস করার চেষ্টা শুরু থেকে করে আসছিলাম। এই দলে আমি একজন কর্মী হিসেবে শুরু থেকেই থাকতে চেয়েছিলাম-এখনো কেউ দলকে আন্তরিকভাবে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এগিয়ে আসলে পার্টির মিটিং এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে চেয়ারম্যান এর পদ দিয়ে দিতে পারলে আমি খুশী হবো।
৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ দল গঠন করে প্রায় ৪ মাস দলের প্রধান নির্ধারণ না করে কার্যক্রম চালিয়েছিলাম। উক্ত সময়ে পার্টির ১০টি মিটিং ১০ জন ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির সভাপতিত্বে করি। দলে যাতে সর্বজনীনতা থাকে তারজন্য প্রবাসী, মুক্তিযোদ্ধা, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আওয়ামীলীগজোট সমর্থনকারী, বিএনপিজোট সমর্থনকারী, সনাতন ধর্মীয়, খ্রিস্টান ধর্মীয়, উপজাতি ইত্যাদি বিভিন্ন পেশা, মত ও ধর্মীয় লোকদের সম্পৃক্ত করি। সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম সারা বাংলাদেশ থেকে আওয়ামীলীগ-বিএনপির তেমন অপছন্দের নয় এবং ব্যাপক পরিচিত আছে-এরকম ১০ জনকে সিলেক্ট করে আমাদের মিটিংয়ে ভোটাভুটির মাধ্যমে একজনকে দলের চেয়ারম্যান বানাব। এরকম অনেকের কাছে আমি ম্যাসেজ পাঠালেও তারা সাড়া দেননি। তাদের মধ্যে সোহেল তাজও একজন। তাঁকে আমার জিমেইল থেকে পার্টির প্রধান হওয়ার কথা উল্লেখ করে ২০২১ সালে কয়েকবার ম্যাসেজ পাঠালেও তিনি সাড়া দেননি। পার্টির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান করার জন্য ঢাকা প্রেসক্লাবের একটি হল বুকিং দিতে গেলে কর্তৃপক্ষ বলেন পার্টির সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক এর স্বাক্ষরিত দরখাস্ত প্রেসক্লাবের সম্পাদক বরাবর দিতে হবে। জবাবে আমি বলি যে, দেশব্যাপী মোটামুটি পরিচিত এরকম একজনকে চেয়ারম্যান বানানোর উদ্দেশ্যে আমরা এখনো পার্টির চেয়ারম্যান-সাধারণ সম্পাদক নির্ধারণ করিনি-জবাবে তিনি বলেন- লেটার হেড প্যাড আছে কিনা? আমি আছে বলাতে তিনি বলেন সভাপতি হিসেবে আপনি স্বাক্ষর করে জমা দেন-আমি অপারগতা প্রকাশ করাই তিনি বলেন আগে চেয়ারম্যান-সাধারণ সম্পাদক নির্ধারণ করে আসুন, না হলে হল বুকিং সম্ভব নয়। পরবর্তীতে ৪ জুন মিটিং এ ভোটাভুটির মাধ্যমে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশ ঐক্য পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়।
“পৃথিবীর ইতিহাস নেতৃত্বের ইতিহাস। একজন যোগ্য নেতা সমাজ ও রাষ্ট্রকে বদলে দিতে পারেন, সৃষ্টি করতে পারেন নতুন ইতিহাস”-এরকম একটা আর্টিকেল আমার লিখা আছে।
নেতার গুরুত্বকে আমি অস্বীকার করছি না কিন্তু বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ডাইনামিক নেতা হিসেবে পরিচিতি পাওয়া নেতারাই পরিবর্তিতে অহমিকায় কিংবা সুপ্রিম নেতাকে কন্ট্রোল করার কার্যকর উদ্যোগ দলে না থাকায়-তারা স্বৈরাচারী হয়ে উঠে দেশ ও দশের মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কাঁচায় না নোয়ালে বাঁশ পাকলে করে ঠাসঠাস। নেতাদেরকে শুরু থেকে প্র্যাকটিস এর মাধ্যমে কন্ট্রোল করা না হলে পরে আর নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। আর এই জন্যই বাংলাদেশ ঐক্য পার্টিতে নীতিকে অগ্রাধিকার দিকে নেতাকে কন্ট্রোল এর নিমিত্তে জবাবদিহিতার কার্যকর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি’র চিন্তাধারা বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি’র নেতৃত্বে কিংবা একই মনমানসিকতা সম্পন্ন অন্য কারো নেতৃত্বে বাস্তবায়ন করা না গেলে আসন্ন গৃহযুদ্ধ থেকে দেশকে বাঁচানো অসম্ভব। আর তাই
দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টিকে জানা প্রতিটি নাগরিক এর জন্য ফরজ বলে আমি মনে করি।
মুহাম্মদ আবদুর রহীম চৌধুরী
প্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি।
মন্তব্য করুন