ডেস্ক রিপোর্টঃ
রাজধানীর সাভারের আশুলিয়ায় প্রেমের ফাঁদে ফেলে নগ্ন ভিডিও ধারণ ও চাঁদা আদায় চক্রের আট সদস্যকে গ্রেপ্তার করে থানায় হস্তান্তর করেছে র্যাব-৪। এ সময় গোপন আস্তানা থেকে উদ্ধার করা হয় ভুক্তভোগী ব্যক্তিকেও।
রবিবার (২১ আগস্ট) দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে ভোরে আশুলিয়ার উত্তর গাজিরচটের বুড়িবাজার এলাকায় অভিযুক্ত অঞ্জনার বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন আশুলিয়ার উত্তর গাজিরচটের বুড়িবাজার এলাকার মৃত আমজাদের মেয়ে অঞ্জনা ভূঁইয়া (৪৫), বাগেরহাট জেলার চিলমারী থানার আরুয়াবনি গ্রামের ইলিয়াছ সরদারের ছেলে নজরুল ইসলাম (২৮), জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ থানার মৌলভীরচর গ্রামের আব্দুল ওয়াদুদের ছেলে মতিউর রহমান (২৮), গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানার শ্রীপুর ছাতানাবাড়ী গ্রামের মো. আমিনের ছেলে নাজমুল হুদা (১৫), চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার আটরশি বালুটুমি গ্রামের সিরাজুল ইসলামের মেয়ে হাছনারা (২৪), গাজীপুর জেলার জয়দেব থানার লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে সাব্বির মিয়া (১৯), মাদারীপুর জেলার কালকিনি থানার এনায়েতনগর গ্রামের ফোরকান সরদারের মেয়ে মো. জান্নাত (২২) ও তার বোন মোছা. জামিলা নুসরাত (১৮)।
স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে আশুলিয়ার গাজিরচটে অঞ্জনার বাড়িতে গোপন আস্তনা তৈরি করে সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল চক্রটি। রাজি না হলে গোপন ঘরে আটকে রেখে মারধর করত। এর আগে গত ২৭ জুলাই দুই যুবককে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মারধর করে টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। পরে পুলিশ খবর পেয়ে তাদের উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল থেকে এক তরুণীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে সময় মূল হোতা অঞ্জনা পালাতক ছিলেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মো. শাহপরান নামের এক চাকরিজীবীর সঙ্গে গ্রেপ্তার হাছনারার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে গত ২০ আগস্ট বিকেলে দেখা করার কথা বলে হাছনারা বাসায় ডেকে নেন ভুক্তভোগীকে। সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত অন্য আসামিরা তাকে মারধর করে কাছে থাকা ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। পরে নগ্ন অবস্থায় ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ভুক্তভোগীকে ব্যাপক মারধর করেন আসামিরা। পরে কৌশলে সিপিসি-২, র্যাব-৪-এর কন্ট্রোল রুমে জানালে ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানান, তারা পলাতক আসামিদের যোগসাজশে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব বা প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে কৌশলে বাসায় ডেকে নেন। পরে একইভাবে তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করেন। তারা একটি সংঘবদ্ধ চক্র তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে এই অপরাধ করে আসছিলেন।
আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তারদের দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।
মন্তব্য করুন