ডেস্ক রিপোর্ট। দি সিলেট পোস্ট।
সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ অবৈধ ও জোরপূর্বকভাবে দোকান ও ঘরবাড়ি ভাংচুর করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত বড়শালা এলাকার বাসিন্দা ফারুক মিয়া। এতে চারশ ব্যবসায়ী উদ্বাস্তু হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলে তিনি দাবি করেন।
রোববার সিলেট প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। ফারুক মিয়া লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমাদের স্বত্ব দখলীয় ভূমি বিমানবন্দর প্রধান ফটক সংলগ্ন বড়শলা মৌজার ১৪৮৭ নম্বর দাগের ভূমি (জে.এল নং- ৫৪, খতিয়ান নং-২)। গত ১২ আগস্ট বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমদ, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে এই জমিতে গড়ে ওঠা দোকানপাঠ এবং পরদিন আধাপাকা বসতঘরে জোরপূর্বক ভাংচুর চালানো হয়।
তিনি আরও বলেন, অভিযানের সময় প্রায় ৫শ পুলিশ ও আনসার বাহিনী এবং অজ্ঞাতনামা আরও প্রশাসনিক ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। তারা বুলডোজার দিয়ে আমাদের প্রায় ৬০ বিঘা জমিতে ৩০টি পাকা ও টিনের বাড়িঘর ও দোকান ভেঙ্গে মাটিতে মিশিয়ে দেয়। আদালতে আমাদের পক্ষে ইনজাঙ্কশন থাকার কাগজ দেখাতে গেলে তারা উল্টো আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়। ভয়ে আমরা প্রায় চারশ লোক জীবন বাঁচাতে অন্যত্র আশ্রয় গ্রহণ করি।
ফারুক মিয়া বলেন, এই ভূমি আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি। ১৯৯৩ সালে সিভিল এভিয়েশনের বিরুদ্ধে আমার পিতা ছয়ফুল্লাহ অর্থঋণ আদালত, সিলেটে মামলা দায়ের করেন। ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের ৭ জুলাই হাইকোর্ট থেকে আমাদের পক্ষে রায় হয় এবং আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছি। ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর সিভিল এভিয়েশন আমাদের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। আপিল এখনো চলমান। অন্যদিকে আমাদের পক্ষে ইনজাঙ্কশন জারি আছে।
তিনি আরও বলেন, এমতাবস্থায় কোনো প্রকার আইনি নোটিশ ছাড়াই মামলা চলমান থাকাবস্থায় ১২ আগস্ট জোরপূর্বক ভাংচুর শুরু করা আদালত অবমাননার শামিল। তাদের মামলার কাগজপত্র দেখালে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট, সিটি মেয়র ও বিমানবন্দরের পরিচালক আমাদের কাগজপত্র ভুয়া বলে দেখতে অনীহা প্রকাশ করেন এবং তাদের পক্ষে হাইকোর্টের রায় আছে বলে জানান। কিন্তু তারা রায়ের কপি আমাদের দেখাতে পারেননি।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এহেন কর্মকাণ্ডের কারণে কোটি টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলে জানান ফারুক। তিনি বলেন, আমরা চারশজন লোক ভিটেমাটি হারা হয়ে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমাদের সব কাগজপত্র দেখে আমাদের জমি ফিরিয়ে দিতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- ফয়সল আহমদ, বাবলু মিয়া, রোজিনা আক্তার, রেজিয়া, রাশিদা আক্তার, হোছনে আরা, নূর উদ্দিন, সায়েদ, মো. জয়নাল, মায়া, সাদেক, মানিক, আনোয়ার আলী, মুন্নী আক্তার, লাইলী বেগম, হাফিজা, ফুলতেরা, খাদিজা, অলী, মারুফ প্রমুখ।
মন্তব্য করুন