
নূরুজ্জামান ফারুকী হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
এক সময়ের গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা কালের পরিক্রমায় এখন অনেকটাই হারিয়ে গেছে। হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশুদিবস উপলক্ষে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার(১৭ মার্চ) বিকেলে হবিগঞ্জ জেলা আধুনিক স্টেডিয়ামে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিযোগিতায় জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ১৫টি ঘোড়া অংশ নেয়।
ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা দেখতে দুপুর থেকেই নানা বয়সী মানুষ দলেবেধে স্টেডিয়ামে ছুটে আসেন। তবে প্রচারণার অভাবে কাঙ্খিত দর্শনার্থী ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় আসননি বলে অভিযোগ করেন অনেকে।
বিকেল ৪টার দিকে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হয়। প্রথম রাউন্ডে ১৫টি ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। সেখান থেকে ১০টি ঘোড়া সেমিফাইনালে অংশ নিয়ে ফাইনাল প্রতিযোগিতায় অংশ নেন ৫টি। এর মধ্যে সবাইকে ছাপিয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন নবীগঞ্জ উপজেলার আলাল মিয়ার ঘোড়া ‘শাহজালালের দোয়া’। দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে একই উপজেলার দিলকাছ মিয়ার ঘোড়া ‘মায়ের আদেশ’ ও তৃতীয় স্থান মাধবপুর উপজেলার বাবুল মিয়ার ঘোড়া ‘রনজিত’।
প্রতিযোগিতা শেষে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বিজয়ীদের হাতে ক্রেস্ট ও পুরুস্কারের চেক তুলে দেন।
প্রতিযোগিতা দেখতে আসেন শহরের শায়েস্তানগর এলাকার মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ‘আমি ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে সব সময় ব্যস্ত থাকি। মাঝে মধ্যে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার সংবাদ পেলেও সময়ের কারণে যাওয়া হয় না। আজকে শহরের ভেতরে এমন সুন্দর একটি আয়োজন করায় আমি খুবই আনন্দিত।’
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মৃত্তিকা বণিক বলেন, ‘আমি আজ প্রথম সরাসরি ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা দেখতে আসছি। প্রতিযোগিতাটি আমার খুবই ভালো গেলেছে। আমি চাইব প্রতি বছরই যেন শহরের মধ্যে এমন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।’
ব্যাংকার আব্দুল আহাদ বলেন- ‘অনেক বার ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা দেখেছি। কিন্তু আজকের আনন্দটা ছিল অন্য রকম। কারণ শহরের ভেতরে এমন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হওয়ায় পরিবারের সবাইকে নিয়ে দেখতে এসেছি। খুবই ভালো লাগছে।
নবীগঞ্জ উপজেলার ঘোড়া ‘শাহজালালের দোয়া’র মালিক আলাল মিয়া বলেন, ‘যেখানেই ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় সেখানেই আমি অংশ নেই। মাঝে মধ্যে জিতি, আবার মাঝে মধ্যে হারি। তাতে কোন সমস্যা নাই। প্রতিযোগিতাংয় অংশ নেই আনন্দের সাথে। আজ আমার ঘোড়া প্রথম স্থান অর্জন করেছে, সেজন্য অঅমি খুবই খুশি।’
জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, ‘আমি শুনেছি ঘোড়দৌড় এই এলাকার এক সময়ের ঐতিহ্য ছিল। তাই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। সবাই প্রতিযোগিতায় অত্যন্ত উৎসাহ-উদ্দিপণার মধ্যেদিয়ে অংশ নিয়েছেন। আমি চাইব এই প্রতিযোগিতা প্রতিবছর অব্যাহত থাকবে
আপনার মতামত লিখুন :