ক্ষমতার অপব্যবহার বাঙালির চরিত্রের সাথে মিশে আছে।


Nazrul Islam প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৫, ৭:৩৮ পূর্বাহ্ন /
ক্ষমতার অপব্যবহার বাঙালির চরিত্রের সাথে মিশে আছে।

নজরুল ইসলাম

যুক্তরাজ্যের এনফিল্ড কাউন্সিলের সাবেক মেয়র ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রাজনীতিবিদ মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম তার মেয়রের পদ-পদবি ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে ৪১ জন আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের জন্য ভিসা নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম The Telegraph।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলাম তার মেয়র হিসেবে অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পরিচিতজনদের যুক্তরাজ্যে আমন্ত্রণ জানাতে ব্রিটিশ হাই কমিশন, ঢাকা বরাবর একাধিক অফিসিয়াল ও বিকৃত (doctored) চিঠি পাঠান। চিঠিগুলোতে এনফিল্ড কাউন্সিলের লোগো ও তার মেয়র পদমর্যাদার ব্যবহার ছিল। এতে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার অনুরোধ জানানো হয়।

তদন্তে প্রকাশ, তিনি মেয়র হওয়ার আগেই কিছু চিঠি পাঠিয়েছিলেন। ডেপুটি মেয়র থাকার সময় থেকেও এমন কার্যকলাপ চলছিল। ১৬০ পৃষ্ঠার একটি স্বাধীন তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়, ইসলাম ব্যক্তিগত স্বার্থে মেয়রের পদ ব্যবহার করেছেন এবং কাউন্সিলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছেন।

চিঠিগুলোর মধ্যে ১৩টি কাউন্সিলের মেয়র অফিস থেকে তৈরি করা হলেও ইসলাম স্বীকার করেছেন যে, তিনি নিজে কমপক্ষে ৬টি চিঠি প্রস্তুত করেছিলেন। আরও ১১টি চিঠির উৎস সন্দেহজনক হলেও, তদন্তকারীরা মনে করছেন সেগুলোও ইসলামই পাঠিয়েছেন।

চিঠিগুলোতে পাসপোর্ট নম্বর, জন্মতারিখ এবং ভ্রমণ ও থাকার সম্পূর্ণ খরচ বহনের আশ্বাস ছিল। ভিসাপ্রার্থীরা এনফিল্ডে ইসলাম সাহেবের বাড়িতে থাকার কথা ছিল।

অবশেষে ৪১ জনের আমন্ত্রণ জানানো হলেও মাত্র একজন অতিথি বাংলাদেশ থেকে অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

এনফিল্ড কাউন্সিলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই চিঠিগুলো প্রস্তুতে অস্বস্তি বোধ করেছিলেন। ফলে ইসলাম পরে নিজেই কিছু চিঠি তৈরি করে, যেগুলোকে অফিসিয়াল চিঠির মতো দেখাতে বিকৃতি ঘটান।

হোম অফিস এখন ৪৭ বছর বয়সী আমিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য ইমিগ্রেশন অপরাধ নিয়ে তদন্ত করছে।

মেয়র হিসেবে প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হয়ে অভিষেক অনুষ্ঠানে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ইসলাম। তবে তাকে এ ঘটনায় নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চাওয়ার জন্য বলা হলেও, এখনো তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করেননি।

তিনি দাবি করেছেন, তার আগের মেয়ররাও নাকি এমন কাজ করেছেন। তবে তদন্তকারীরা বলছেন, ইসলাম “সীমার অনেক বাইরে গিয়ে” ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন এবং “একটি সুস্পষ্ট আচরণগত ধরন” দেখিয়েছেন যা তার পদমর্যাদার সম্মান ক্ষুণ্ণ করেছে।

সংবাদ সোর্স: The Telegraph